আজ্ঞাবহ দুদক
মাহফুজুর রহমান মানিক
স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখন সরকারের অধীন। ২৬ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুদকের সংশোধনী-২০০৪ নীতিগত অনুমোদন হয়। গণমাধ্যম দুদকের এ সংশোধনীর ব্যাপারে আপত্তি জানায়। সরকারের তরফ থেকে সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মহীউদ্দীন খান আলমগীর দুদকের প্রয়োজন নেই বলে মত দেন। তার ভাষায়, 'বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর দুদক যেভাবে কাজ করেছে তাতে এই কমিশনের প্রয়োজনীয়তা নেই। তখন এই কমিশন স্বৈরতন্ত্রের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করেছে। সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে দুদককে ব্যবহার করেছে।' ৩ মে সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংকালে তিনি আরও বলেন, 'গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিযুক্তীয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের ওপর স্থান পেতে পারে না।' দুদকের ব্যাপারে সরকারের আপত্তি থাকতেই পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদকের কর্মকাণ্ড ছিল বিতর্কিত। তখন দুর্নীতি দমনের নামে দমন করা হয় রাজনীতিবিদদের। তাই বলে দুদকের প্রয়োজন নেই তা ঠিক নয়। সরকারের কাজের সুবিধার্থেই দুদক প্রয়োজন। সরকারের প্রাত্যহিক কাজের স্বচ্ছতা এবং ভারসাম্য রক্ষার (চেক অ্যান্ড ব্যালান্স) জন্যই দুদক প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণ তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। সরকার যদি মনে করে আমরা দায়িত্ব পেয়েছি, জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছে, আমরা দায়িত্বশীল_ সে দায়িত্ব কতটা পালন হচ্ছে বা ঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি-না তা দেখার জন্যই দুদক। দুদক সরকারের বিরোধী কোনো সত্তা নয় বরং সহায়ক।
বর্তমান সরকার যদিও নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ে দুর্নীতি দমনকে দ্বিতীয় স্থান দিয়েছে। বলা হয়েছে, 'দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।' বাস্তবে সরকার তার ১৫ মাসের ক্ষমতায় এসবের কিছুই করেনি। উল্টো কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস করে একে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হলো। দুর্নীতি দমনে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিকল্প নেই। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার জন্য সরকারেরই এর ক্ষমতায়নের প্রয়োজন ছিল।
বর্তমান সরকার যদিও নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ে দুর্নীতি দমনকে দ্বিতীয় স্থান দিয়েছে। বলা হয়েছে, 'দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।' বাস্তবে সরকার তার ১৫ মাসের ক্ষমতায় এসবের কিছুই করেনি। উল্টো কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস করে একে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হলো। দুর্নীতি দমনে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিকল্প নেই। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার জন্য সরকারেরই এর ক্ষমতায়নের প্রয়োজন ছিল।
mahfuz.du@yahoo.com
http://www.samakal.com.bd/details.php?news=42&view=archiev&y=2010&m=05&d=22&action=main&menu_type=&option=single&news_id=67057&pub_no=343&type=
ট্যাগঃ
Very good,