Mahfuzur Rahman Manik
ট্রাম্পের টুইট, কেএফসির প্যারোডি
জানুয়ারী 8, 2018

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের মধ্যকার শত্রুতা, বাগ্‌যুদ্ধ নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার বারবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা বিশ্বে আলোচনায় এসেছে এবং দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ট্রাম্প-কিমের মধ্যে বাদানুবাদ হয়েছে। কিম যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেন, ট্রাম্পও পাল্টা জবাব দেন। নতুন বছরে কিম যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বার্তা দেন যে, সবসময়ই পারমাণবিক অস্ত্রের বোতাম থাকে তার টেবিলে। প্রত্যুত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩ জানুয়ারি টুইটারে যা লেখেন, বাংলা করলে দাঁড়ায়- উত্তর কোরিয়ার নেতা একটু আগেই বলেছেন যে, 'সব সময় পারমাণবিক অস্ত্রের বাটন তার টেবিলে থাকে।' কেউ কি তার গ্রাসকৃত ও ক্ষুধার্ত শাসন থেকে তাকে জানাবেন যে, আমারও একটি পারমাণবিক বোতাম রয়েছে, যেটি তারটির চেয়েও বড় ও শক্তিশালী। আর বোতাম কিন্তু যথার্থ অর্থেই কাজ করে! ট্রাম্পের এ বার্তা আলোচনার আগেই এ বার্তাকে কেন্দ্র করে আরেক বার্তা সামনে আসে। যেটি কিমের নয়, কেএফসির! হ্যাঁ, ফায়েড চিকেনের জন্য বিখ্যাত কেএফসির। যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডের কেএফসি ট্রাম্পের টুইটের ভাষা অনুসরণে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যাকডোনাল্ডের উদ্দেশে প্যারোডি করে টুইট করে: ম্যাকডোনাল্ডের নেতা রোনাল্ড মাত্রই বলেছেন যে, 'তার টেবিলে সবসময় বার্গার থাকে।' কেউ কি তার বড় জুতা ও লাল নাকের শাসন থেকে তাকে জানাবেন যে, আমার টেবিলেও বার্গার থাকে। তবে আমারটা বাক্সে থাকে, এটি তারটির চেয়ে বড় ও শক্তিশালী। আর আমারটায় কিন্তু মাংসের ঝোলও আছে!

কেএফসি টুইটের শেষে নিউক্লিয়ার বাটন হ্যাশট্যাগ করে ট্রাম্পের টুইটকেই লক্ষ্য করেছে। বিষয়টির বিস্তারিত আসে রোববার বিবিসির 'কেএফসি জাইবে ম্যাকডোনাল্ড'স উইথ ট্রাম্প প্যরোডি টুইট' শিরোনামের প্রতিবেদনে। বলা বাহুল্য, কেএফসি ও ম্যাকডোনাল্ড ফাস্টফুডের শীর্ষস্থানীয় ও প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ড। উভয়টিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক। বিশ্বের ১২৩টি দেশে প্রায় ২০ হাজার জায়গায় কেএফসির রেস্টুরেন্ট রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে কেএফসির ১৯টি শাখা। ম্যাকডোনাল্ডের রেস্টুরেন্ট বাংলাদেশে না থাকলেও বিশ্বের ১০০টিরও অধিক দেশে প্রায় ৩৬ হাজার ৯০০টি আউটলেট রয়েছে। আয়ের দিক থেকে ম্যাকডোনাল্ডই শীর্ষে।

ট্রাম্পের সিরিয়াস ও রাজনৈতিক টুইটকে কেএফসির প্যারোডি করার কারণ হয়তো বাণিজ্যিকই। কেএফসি গ্রাহকদের আকর্ষণের জন্য কিংবা নিজেদের ম্যাকডোনাল্ডের চেয়েও ভালো প্রমাণের জন্য এটি করতে পারে। কেএফসির প্রধান কার্যালয় থেকে যে এ টুইট করেছে, তা কিন্তু নয়। হয়তো কেএফসি ইউকে ট্রাম্পের টুইট দেখে বিষয়টি ইন্টারেস্টিং ভেবে টুইট করেছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যে হবে তাও হয়তো কেএফসির ভাবনার বাইরে ছিল না। এ টুইটে লাইক পড়েছে চার লাখ ৯২ হাজারের অধিক, শেয়ার হয়েছে এক লাখ ৮৭ হাজারের ওপরে আর কমেন্ট পড়েছে চার হাজারেরও বেশি। কমেন্টে একজন লিখেছে- আমরা পুঁজিবাদের কোন পর্যায়ে বাস করছি, যেখানে ব্র্যান্ডগুলো ফ্রাইড চিকেন বিক্রির জন্য পারমাণবিক হুমকিকেও অনুকরণ করছে।

বাস্তবতা তা-ই যে, যেভাবে পারছে ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটাতে চাইছে। বিবিসির আলোচ্য প্রতিবেদনটিই বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে করপোরেট টুইটগুলো পণ্যের বিজ্ঞাপনের চেয়েও বেশি হয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্প কেএফসির টুইট নিয়ে মাথা ঘামাবেন কি-না জানি না; তবে কিম কিছু বললে নিশ্চয়ই চুপ থাকবেন না। তবে ট্রাম্প আপাতত এখন ব্যস্ত 'ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি' বইয়ের প্রতিক্রিয়া সামলাতে, সেটি অবশ্য ভিন্ন আলোচনা।

ট্যাগঃ , , , , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।