Mahfuzur Rahman Manik
প্রতিদ্বন্দ্বী
এপ্রিল 18, 2016

A Bangladeshi woman casts her vote at a polling station in Dhaka, Bangladesh, Sunday, Jan. 5, 2014. Police fired at protesters and more than 100 polling stations were torched in Sunday’s general elections marred by violence and a boycott by the opposition, which dismissed the polls as a farce. (AP Photo/Rajesh Kumar Singh)নির্বাচিত হবেন- এমন সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও কিন্তু অনেকে নির্বাচনে প্রার্র্থী হন। নির্বাচিত হলে তো কথাই নেই, না হলেও প্রার্থীর কোনো লাভই যে হয় না, তা নয়। প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যে কেউ যেমন তার জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারেন, তেমনি নিজেকে পরিচিত করার সুবর্ণ সুযোগও গ্রহণ করতে পারেন। আজকালকার নির্বাচন মানেই প্রচার-প্রচারণা। ছবি সংবলিত পোস্টার, প্রার্থীর গুণকীর্তন করে লেখা লিফলেট, বিশাল আকারের ব্যানার আর মানুষের কর্ণকুহরে পেঁৗছার জন্য করা হয় মাইকিং। দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাওয়া তো আছেই। তার বাইরে আজকের যুগে সংবাদমাধ্যমও প্রচারের বড় ক্ষেত্র। প্রচার-প্রচারণার কাজে সাধারণত সমর্থক গোষ্ঠী ছাড়াও ব্যক্তির পরিবার সর্বতোভাবে সহযোগিতা করে থাকে। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা যেমন প্রচারের কাজ করেন, তেমনি ভোটও দেন। কিন্তু বিপত্তিটা তখনই হয়, যখন একই পরিবারের দুইজন একই পদে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হন। এ রকম ঘটনা কম ঘটলেও নির্বাচনের সময় নানা জায়গায় তা দেখা যায়। ইউপি নির্বাচন নিয়ে সমকালের রোববারের বিশেষ আয়োজনে এ রকমই একটি খবর_ 'ফুলবাড়িয়ায় বাবার প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়ে'।

প্রতিবেদনটি বলছে, চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রাঙামাটি ইউনিয়নে একই পদে বাবা ও মেয়ে প্রার্থী হয়েছেন। উভয়ই চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বৈধতা পান। বাবার প্রার্থিতা স্বাভাবিক ঘটনাই বলা যায়। অনেকের কাছে হয়তো মেয়ের প্রার্থী হওয়াটা বিস্ময়ের ব্যাপার হতে পারে। কন্যাও একই এলাকায় প্রার্থী হচ্ছেন। উভয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী। উভয়ই প্রচার চালিয়ে মাঠ সরগরম করছেন।
অবশ্য এ রকম অনেকেরই অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাবার প্রতিদ্বন্দ্বী ছেলে; শ্বশুরের প্রতিদ্বন্দ্বী জামাই; চাচার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাতিজা নির্বাচন করেছেন। এসব পারিবারিক লড়াইয়ের অবশ্য নানা কারণ থাকতে পারে। হয়তো চাচা এক দল থেকে নির্বাচন করছেন, ভাতিজা দাঁড়িয়েছেন অন্য দলের হয়ে। আবার এমনও হতে পারে, বাবা নির্বাচনে দাঁড়াবেন কিন্তু তিনি যদি তার প্রার্থিতা বৈধতার ব্যাপারে আশঙ্কা করেন, তখন ছেলেকেও দাঁড় করাতে পারেন; অন্তত পরিবারের একজনের প্রার্থিতা যদি টেকে। আবার চমক লাগানোর জন্যও হয়তো হতে পারে। যেহেতু এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ নেই, অন্য সব ঠিক থাকলে জামানতের টাকা দিয়ে যে কেউ দাঁড়াতে পারছেন।
দেখার বিষয়, একই পরিবারের একাধিক সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী হলে অন্য সদস্যদের অবস্থা কেমন হয়। ফুলবাড়িয়ার এই ঘটনার কথাই ধরা যাক। বাবা-মেয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ফলে প্রচারের ক্ষেত্রে বাবার ছেলে বা অন্য মেয়ে বা স্ত্রী কার পক্ষে যাবেন? তাদের দোটানায় পড়ারই কথা। তবে এসব ক্ষেত্রে যে মানুষের কৌতূহল থাকছে তা বলাই যায়। যেমন সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, বাবা-মেয়ের প্রার্থী হওয়ার ঘটনা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার বিষয়। এই পরিবারের দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ আমাদের জানা নেই। আমরা এটাও জানি না শেষ পর্যন্ত দুইজনের একজন বসে যান কি-না। কিংবা উভয়ই বসে পড়বেন এমনটাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বাবা-মেয়ের একই সঙ্গে প্রার্থী হওয়া যেমন আলোচিত বিষয়, উভয়ের বসে পড়াও তো তেমনি আলোচনার জন্ম দেবে। সেটাও কি তাদের প্রার্থী হওয়ার অন্যতম কারণ? কে জানে।

ট্যাগঃ , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।