Mahfuzur Rahman Manik
ইন্টারনেটের বাতায়ন
জুলাই 8, 2014
internetবর্তমান দুনিয়ার অন্যতম তথ্যভাণ্ডার ইন্টারনেট। ইন্টারনেট মূলত ওয়েবসাইটের ভাণ্ডার। স্যার টিম বার্নারস লি যেটি আবিষ্কার করেছেন ২৫ বছর আগে। ডবি্লউডবি্লউডবি্লউ ডটের এই ওয়েবসাইট সংখ্যা পাওয়া গেল নিউজউইকের চলতি সংখ্যার এক প্রতিবেদনে। ইনসাইড দ্য স্ট্রাগল টু প্রিজার্ভ দ্য ওয়ার্ল্ডস ডাটা শিরোনামের প্রতিবেদনে ফিলিপ জ্যাকবসন ওয়েবসাইটের সংখ্যা বলছেন ৬০০ মিলিয়ন মানে ষাট কোটিরও বেশি। যেখানে প্রতিঘণ্টায় ৪ হাজার ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন হয়। বোঝাই যাচ্ছে, প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিটি ওয়েবসাইট যে কোনো বিষয়ই হোক না কেন প্রারম্ভিকভাবে বলা যায়, এটি তথ্যই দিচ্ছে। ধরন অনুযায়ী এই তথ্যের ভিন্নতা হয়তো রয়েছে; যেমন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে প্রধানত সংবাদ, ফিচার, বিশ্লেষণ ইত্যাদিই থাকবে। আবার ইউটিউব হলো ভিডিওর সমষ্টি। কিংবা কেনাবেচার ওয়েবসাইটে পণ্যই থাকবে। এভাবে প্রতিটি ওয়েবসাইটের বিদ্যমান কন্টেন্ট আসলে ডাটা। এই ডাটাকে যখন কাজে লাগানো হয়, তখনই সেটাকে আমরা ইনফরমেশন বা তথ্য বলি।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ডাটা আপলোড করা হয়। নতুন ডাটা আপলোড করলে স্বাভাবিকভাবেই আগের ডাটা পুরনো হয়ে যায়। এভাবে পুরনো হতে হতে হয়তো অনেক ডাটা থাকে না কিংবা হারিয়ে যায়। এই ডাটাগুলো হয়তো অনেকের কাছে তথ্য আকারে গুরুত্বপূর্ণ। কেউ গবেষণা করতে গেলে, ইতিহাস খুঁজতে গেলে কিংবা যে কোনো বিষয়ে গভীর অনুসন্ধান করতে গেলে এই পুরনো ডাটার প্রয়োজন পড়ে। ঠিক এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ইন্টারনেট আর্কাইভ নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। আসলে ওপরের নিউজউইকের প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠানটি ধরেই করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে এর হেডকোয়ার্টার অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা ২০০ যার ওয়েবসাইট ঠিকানা_ আর্কাইভ ডট অর্গ। একে বলা হয় ডিজিটাল লাইব্রেরি। যেখানে লাখ লাখ ভিডিও-অডিও রয়েছে। আর ওয়েবসাইটের ৪০ কোটিরও বেশি পেজ সংরক্ষিত রয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত এসব তথ্য যে কেউ বিনামূল্যে পেতে পারেন।
Internet-archiveহাল আমলে ইনফরমেশন বা তথ্যও এক ধরনের শক্তি। সবদিক থেকেই যার তথ্যভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ তিনি তত শক্তিশালী। ইন্টারনেটে যে বিশাল তথ্যভাণ্ডার রয়েছে, তা কাজে লাগানো এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইটের নানা হিসাব-নিকাশ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো সাইট যে কোনো সময়ে বন্ধ হওয়াটা যেমন স্বাভাবিক আবার একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রশাসনও কোথাও কোথাও অনেক ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়াও অস্বাভাবিক নয়। এসব সাইটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণের জন্যই ইন্টারনেট আর্কাইভের মতো প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
ইন্টারনেট আর্কাইভের স্লোগান হলো ইউনিভার্সাল এক্সেস টু অল নলেজ অর্থাৎ জ্ঞানের সর্বজনীন অধিকার। একে অন্যভাবে বলা যায়, সবার তথ্য পাওয়ার অধিকার। ইন্টারনেটের কল্যাণেই হয়তো এটা সম্ভব হয়েছে। আজকে আমাদের দেশেও যখন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে সব তথ্য সহজে পাওয়া যায়। পাওয়া যায় একেবারে এমপি-মন্ত্রী হতে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা-ফোন নম্বর। তখন আর বলার অপেক্ষা থাকে না যে, অন্তত ইন্টারনেটের বাতায়ন সবার জন্য উন্মুক্ত। সেখান কে কীভাবে তথ্য নিয়ে উপকৃত হবে তার দায়িত্ব তো তারই।

ট্যাগঃ , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।