Mahfuzur Rahman Manik
শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে বই পাবে তো?(যুগান্তর ২০ আগষ্ট ২০০৯)
মার্চ 17, 2010

৮ আগস্ট যুগান্তরের প্রধান খবরে আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই না পৌঁছার আশঙ্কা করা হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখেই এ আশঙ্কা। এ প্রতিবেদনের আলোকে পর দিন অর্থাৎ ৯ আগস্ট যুগান্তরের সম্পাদকীয় ছিল বই সংকট নিয়েই।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, এনসিটিবিকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বই ছাপার কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে এখন আগস্ট শেষ পর্যায়ে। এখনও টেন্ডার কাজ বাকি। টেন্ডার কাজ শেষ করে ২ মাসের মধ্যে কিভাবে সব পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো হবে, সেটাই প্রশ্ন। সরকারের সদিচ্ছা অবশ্য লক্ষণীয়। সরকারের তরফ থেকে যথাসময়ে বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
সরকার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও সংশয়ে জনগণ। কারণ অভিজ্ঞতা। প্রতিবছরই দেখা যায়, বছর শুরুর আগে সরকার কিংবা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। জনগণ নির্বাচিত সরকার দেখেছে। দেখেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সব আমলেই একই চিত্র।
যুগান্তরের এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সে অভিজ্ঞতার পাল্লা আরও ভারি হল। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা সরকারের। ২০১২ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এনরোলমেন্ট (শিক্ষার্থী ভর্তি) শতভাগ করার রূপকল্প করেছে তারা। শিক্ষক, শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রধান উপকরণ বইকে যথাসময়ে সবার হাতে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের।
কিন্তু যখন শুনি সিন্ডিকেটের কব্জায় চলে গেছে বইয়ের বাজার, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকাশনা সমিতির খামখেয়ালি, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার সংবাদ পড়ি, তখন মুষড়ে পড়ি। এ বছরের শুরুতে বই নিয়ে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তা সত্যিই দুঃখজনক। মার্চ মাসের শেষ নাগাদও বই পাওয়া যাচ্ছিল না। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়-য়া আমার ছোটভাই সব বই সংগ্রহ করেছে তিন মাসে।
২০১০ সাল থেকে বিনামূল্যে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বই বিতরণের কথা বলেছে সরকার। কবীর চৌধুরী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার সুপারিশ করেছে। বিদ্যমান ১১ ধারার প্রাথমিক শিক্ষা বিলুপ্ত করে একমুখী প্রাথমিক শিক্ষার সুপারিশও এ কমিটি করেছে। সব মিলিয়ে আমাদের শিক্ষার উন্নয়নে এক বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টতর হচ্ছে। প্রধান শিক্ষা উপকরণ পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে সঠিক সময়ে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমেই সরকারের সে সংস্কার কার্যক্রমের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করবে অনেকাংশে। বইয়ের ক্ষেত্রে বিগত সরকারকে দোষারোপ করে লাভ নেই। আমরা আশা করি, শিক্ষার সব কার্যক্রম সরকার দক্ষতার সঙ্গে সমাধা করবে।

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।