অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে এবার ৬২,৩০৭ জন শিক্ষার্থী পেয়েছে জিপিএ-৫। এসএসসির ফল প্রকাশের পর আমরা এসব শিক্ষার্থীর বাঁধভাঙা জোয়ার দেখেছি। জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেডে নম্বর সত্যিই আনন্দের। প্রথম পরীক্ষার আনন্দে মেতে উঠলেও মন ভালো নেই অনেকেরই। কারণ ভর্তির চিন্তা। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় যেভাবে ভালো করছে, সেভাবে বাড়ছে না ভালো কলেজের সংখ্যা। ফলে সর্বোচ্চ গ্রেডে নম্বর নিয়েও কাক্সিক্ষত কলেজে ভর্তি হতে পারবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত এরা। অভিভাবকরাও মুক্ত নন চিন্তা থেকে।
এ চিন্তার মাত্রা বেড়েছে কলেজে ভর্তির নীতিমালা শুনে। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগের নিয়মেই ভর্তি করা হবে। বিতর্কিত এ নিয়মে কতটা যথার্থ প্রার্থী বাছাই করা যাবে সেটাই প্রশ্ন। জিপিএ’র ভিত্তিতে ভর্তি অসম্ভবই বটে। ন্যূনতম দশ হাজার শিক্ষার্থীও যদি গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায় তখন প্রথমসারির কলেজগুলো কী করবে। বাছাই প্রক্রিয়ায় যদি বয়সের প্রাধান্য ধরা হয়, তাতে মেধার অবমূল্যায়ন করা হবে। বিদ্যমান পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীরা স্পষ্টতই বঞ্চিত হবে। কারণ রাজধানীর শিক্ষার্থীদের বয়স গ্রামের শিক্ষার্থীদের তুলনায় কিছুটা কমই। এ পদ্ধতির পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।
কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বর্তমান পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হওয়া। ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট এবং এসএসসির রেজাল্ট একত্রে নির্ণয় করা হবে মেধা স্কোর। এ স্কোরে যে এগিয়ে থাকবে সেই কাক্সিক্ষত কলেজে ভর্তিযোগ্য হবে। ভর্তি পরীক্ষায় যারা নিজের যোগ্যতা দিয়ে ভালো করতে পারবে তারাই সিরিয়াল অনুযায়ী কাক্সিক্ষত কলেজে ভর্তি হতে পারবে। কারণ দিন দিন বাড়বে শিক্ষার্থী, বাড়বে জিপিএ-৫ এতে সন্দেহ নেই। সেক্ষেত্রে তাদের জিপিএ এবং ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হলে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরাই ভর্তির সুযোগ পাবে। তখন আর কারও অভিযোগ থাকবে না।
সরকার এক্ষেত্রে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। পাশাপাশি প্রত্যেক কলেজে শিক্ষার মান বৃদ্ধির বিষয়টা নিশ্চিত করা দরকার। যদি প্রত্যেক কলেজের শিক্ষার মান সমান হয় তখন নির্দিষ্ট কোন কলেজে ভর্তির চাপ পড়বে না। কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির যথার্থতা নির্ণয়ে কর্তৃপক্ষের বোধোদয় আবশ্যক।