সুমা রাহা
সালমান খানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। সিনেমায় তার পেশিবহুল অতিমানবীয় চরিত্রের প্রতি বরং আমার এক ধরনের অনুরাগ আছে। এ রকম নয় যে সেখানে সালমান খান খুব স্মার্ট। তারপরও আমি তাকে পছন্দ করি যখন তিনি পেশল, যখন সালমান বোকা বোকা ভাব করেন। তার বেমানান ইংরেজি উচ্চারণ শুনে অনেক সময় আমি হেসে উঠি। সেই সালমানই সালমান খান।
তবে কেন যেন আমি তার ২০০২ সালে গাড়িচাপার মামলায় মুম্বাই হাইকোর্টের নির্দোষ প্রমাণের রায়ে আনন্দিত নই। আদালত বলেছেন, প্রসিকিউশন প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সালমান যে তার টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি চালিয়ে তা ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা কয়েকজন মানুষের ওপর উঠিয়ে দেন, তাতে এক ব্যক্তি মারা যান এবং চারজন গুরুতর আহত হন।
সালমান ও তার পরিবারের জন্য এই রায় ছিল এক বিরাট স্বস্তির বিষয়। যদিও তিনি বছর বছর একটার পর একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংঘটিত করেই আসছিলেন। তিনি বিপন্ন প্রাণী শিকার করেছেন, এমনকি তার বান্ধবীকে মারার অভিযোগেও অভিযুক্ত।
তার মতো তারকার জন্য অবশ্য গাড়িচাপার ঘটনার তুলনায় এসব সাধারণ বিষয় নস্যিই বলা চলে। তার খালাস হওয়ার ঘটনা শোনার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। অনেকে বলছেন, ভারতে ধনী ও ক্ষমতাবানরা হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েও বাস্তবিক অর্থেই পার পেতে পারেন।
রায় সঠিক হওয়ার পরও কি একজন তারকা হওয়ার কারণে তিনি মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন? হতে পারে। তবে ব্যক্তির ইমেজ দেখলে কারও চোখে এটা ভেলকিও হতে পারে। সাদা টয়োটায় প্রচণ্ড গতিতে একজন সিনেমার তারকা আসছেন এবং তা ফুটপাতে কয়েকজন অধিবাসীর ওপর উঠে গিয়েছে_ এটা অস্পষ্ট কোনো বিষয় নয়। কারণ সেখানে একজন মারা যান ও চারজন আহত হন। এখন তেরো বছর পর আদালত বলছেন, সালমান তা করেননি। আচ্ছা, ভালো। আদালত সালমানকে নির্দোষ বলছেন, তাহলে এটা কে করেছে? দোষীকে কীভাবে পাওয়া যাবে ও শাস্তি দেওয়া হবে?
মজার ব্যাপার হলো, মুম্বাই হাইকোর্টের এই বিচারের বিষয়ে বিচারপতি এ আর যোশি বলছেন, তিনি এই মামলায় জনমত সম্পর্কে সচেতন। তবে আদালত আনীত প্রমাণের ওপরই রায় দিয়ে থাকেন। জনমতে কোনো কিছু আসে যায় না।
সুতরাং বলাই যায়, বিচারপতি যোশি একটা শক্ত রায় দিয়েছেন। কারণ তিনি জানতেন, সালমান খানকে খালাস দেওয়ার মাধ্যমে তিনি আসলে জনমতের বিপরীতেই রায় দিয়েছেন। যেখানে মানুষ দেখতে চেয়েছে বলিউডের প্রভাবশালী তারকা দোষী প্রমাণিত হয়েছে। তারা এটাও দেখতে চেয়েছে, অপরাধের কারণে একজন ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি কারান্তরিত হচ্ছেন।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মুম্বাইয়ের পুলিশ এই মামলার যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এমনকি বিচারক যোশিও এ কথা বলেছেন যে, উপস্থাপিত প্রমাণ ও সাক্ষ্যের মধ্যে কিছুটা অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এই মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ কি নিজেই অবহেলা করেছে নাকি কোনো প্রভাবক শক্তি আছে।
আসলে এটা রাগ হওয়ার বিষয় নয় যে, একজন পুরোদস্তুর তারকা সালমান খান খালাস পেয়েছেন। তবে রাগের কারণ একটাই, এত বড় অপরাধের কিছুই হয়নি। কারণ গৃহহীন মানুষ, যারা সে রাতে গাড়িচাপা পড়েছিল তারা ন্যায়বিচার পায়নি।
সালমান ও তার পরিবারের জন্য এই রায় ছিল এক বিরাট স্বস্তির বিষয়। যদিও তিনি বছর বছর একটার পর একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংঘটিত করেই আসছিলেন। তিনি বিপন্ন প্রাণী শিকার করেছেন, এমনকি তার বান্ধবীকে মারার অভিযোগেও অভিযুক্ত।
তার মতো তারকার জন্য অবশ্য গাড়িচাপার ঘটনার তুলনায় এসব সাধারণ বিষয় নস্যিই বলা চলে। তার খালাস হওয়ার ঘটনা শোনার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। অনেকে বলছেন, ভারতে ধনী ও ক্ষমতাবানরা হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েও বাস্তবিক অর্থেই পার পেতে পারেন।
রায় সঠিক হওয়ার পরও কি একজন তারকা হওয়ার কারণে তিনি মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন? হতে পারে। তবে ব্যক্তির ইমেজ দেখলে কারও চোখে এটা ভেলকিও হতে পারে। সাদা টয়োটায় প্রচণ্ড গতিতে একজন সিনেমার তারকা আসছেন এবং তা ফুটপাতে কয়েকজন অধিবাসীর ওপর উঠে গিয়েছে_ এটা অস্পষ্ট কোনো বিষয় নয়। কারণ সেখানে একজন মারা যান ও চারজন আহত হন। এখন তেরো বছর পর আদালত বলছেন, সালমান তা করেননি। আচ্ছা, ভালো। আদালত সালমানকে নির্দোষ বলছেন, তাহলে এটা কে করেছে? দোষীকে কীভাবে পাওয়া যাবে ও শাস্তি দেওয়া হবে?
মজার ব্যাপার হলো, মুম্বাই হাইকোর্টের এই বিচারের বিষয়ে বিচারপতি এ আর যোশি বলছেন, তিনি এই মামলায় জনমত সম্পর্কে সচেতন। তবে আদালত আনীত প্রমাণের ওপরই রায় দিয়ে থাকেন। জনমতে কোনো কিছু আসে যায় না।
সুতরাং বলাই যায়, বিচারপতি যোশি একটা শক্ত রায় দিয়েছেন। কারণ তিনি জানতেন, সালমান খানকে খালাস দেওয়ার মাধ্যমে তিনি আসলে জনমতের বিপরীতেই রায় দিয়েছেন। যেখানে মানুষ দেখতে চেয়েছে বলিউডের প্রভাবশালী তারকা দোষী প্রমাণিত হয়েছে। তারা এটাও দেখতে চেয়েছে, অপরাধের কারণে একজন ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি কারান্তরিত হচ্ছেন।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মুম্বাইয়ের পুলিশ এই মামলার যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এমনকি বিচারক যোশিও এ কথা বলেছেন যে, উপস্থাপিত প্রমাণ ও সাক্ষ্যের মধ্যে কিছুটা অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এই মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ কি নিজেই অবহেলা করেছে নাকি কোনো প্রভাবক শক্তি আছে।
আসলে এটা রাগ হওয়ার বিষয় নয় যে, একজন পুরোদস্তুর তারকা সালমান খান খালাস পেয়েছেন। তবে রাগের কারণ একটাই, এত বড় অপরাধের কিছুই হয়নি। কারণ গৃহহীন মানুষ, যারা সে রাতে গাড়িচাপা পড়েছিল তারা ন্যায়বিচার পায়নি।
- টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে সংক্ষেপিত ভাষান্তর মাহফুজুর রহমান মানিক
- সমকালে প্রকাশিত, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫
- ই-সমকাল হতে দেখুন
- সুমা রাহা: টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক
ট্যাগঃ আদালত, তারকা, বিচার, ভারত, সালমান খান