Mahfuzur Rahman Manik
ইন্টারনেটে নির্বাচনী প্রচারণা
এপ্রিল 8, 2015

election-online-campaignইন্টারনেট ব্যক্তিগত প্রচার-প্রচারণাকে ছাড়িয়ে দুনিয়াজুড়ে নানা নির্বাচনেও প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। মানুষের কাছে পেঁৗছানোর জন্য এর চেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী উপায় আর কোনটি? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচারণা দেখা গেছে। সেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেশি হওয়ায় এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দেশেও বিভিন্ন নির্বাচনে সে ধারা চালু হয়েছে। এখানে দিন দিন বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। বর্তমানে এ সংখ্যা এমন এক পর্যায়ে পেঁৗছেছে, যেখানে পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক হিসাবমতে, ইন্টারনেটের গ্রাহক ৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার। এর মধ্যে মোবাইলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৪ কোটি ১৩ লাখ। দেশে যেখানে প্রায় প্রতি চারজনের একজন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, সেখানে এ মাধ্যমটিও নির্বাচনী প্রচারণায় অগ্রাধিকার পাবে এটা বলাই যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের প্রার্থীরা সচেতন হলেও নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের সচেতনতা লক্ষণীয় নয়।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার থেকে। নির্বাচনী এ প্রচারণার মধ্যে নির্বাচন কমিশন ইন্টারনেটে প্রচারণার বিষয়ে কিছু বলেনি। হয়তো তারা ইন্টারনেটকে গুরুত্ব দেননি কিংবা ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গেছেন। প্রার্থীদর মধ্যে অনেকে অবশ্য বসে থাকেননি। তারা আগে থেকেই প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকেই প্রধানত তা দেখা গেছে। অনেক প্রার্থী ইতিমধ্যে তার নামে ফেসবুকে পেজ খুলেছেন, যেখানে প্রচারের পাশাপাশি তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের খবরও শেয়ার দিচ্ছেন। ফেসবুক থেকে এক ধাপ এগিয়ে আমরা প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও দেখছি। এমনকি প্রার্থীরা সংবাদমাধ্যমের কাছে তাদের প্রচারণার কৌশল বলতে ফেসবুক ও ওয়েবসাইটের কথাও বলছেন, যেটা সত্যিই ইতিবাচক।
স্বাভাবিকভাবে আমরা দেখি যারা নির্বাচনে দাঁড়ান তারা ভোটের আগে মানুষের কাছে যান। ভোট ও দোয়া চান। ভোটে নির্বাচিত হয়ে গেলে তাদের অনেককেই আর পাওয়া যায় না। প্রয়োজনে যেতে হলেও তাদের দেখা পেতে নানা কাঠখড় পোড়াতে হয়। অথচ তারা ইন্টারনেটে আপডেট থাকলে মানুষ সহজেই তাদের কাছে পেঁৗছতে পারবে। এর মাধ্যমে হয়তো সমাজে সাধারণ মানুষ ও নেতাদের মাঝে যে দেয়াল তৈরি হয়ে আছে তার কিছুটা হলেও অবসান ঘটতে পারে। নির্বাচিত হয়ে গেলে নেতারা বলেন, আমরা নির্বাচিত হয়েছি কিংবা বিজয়ী হয়েছি। তারা এটা বলেন না যে, আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। নিজেদের দায়িত্বশীল মনে করলে আচরণ নিশ্চয় ভিন্ন হবে।
homeআসলে নির্বাচনী প্রচারণা বলতে দেখা যাচ্ছে কতগুলো ওয়াদা। যেখানে প্রার্থীরা বলছেন, তিনি নির্বাচিত হলে এটা এটা করবেন। সিটি নির্বাচনে দেখছি প্রত্যেকে সুন্দর নগর উপহার দেওয়ার কথা বলছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় নগরে সমস্যার অন্ত নেই। প্রার্থীরা সেসবের বিস্তারিত জেনে সমাধানের অঙ্গীকার করছেন। সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করেই ভোট দেয়। তাদের কাছে নেতারা গেলেই যেন খুশি। নির্বাচনের নানা রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ এ লেখার প্রসঙ্গ নয়। তবে বলা ভালো, নির্বাচনী প্রচারণাটা যখন ইন্টারনেটে তখন সবই কিন্তু দলিল আকারে মানুষ পেয়ে যাচ্ছে। সুতরাং বুঝেশুনেই বোধহয় ওয়াদা করা দরকার।

ট্যাগঃ , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।