Mahfuzur Rahman Manik
অতিথি পাখি কিংবা আমাদের চড়ূই
জানুয়ারী 13, 2015

Guestসম্প্রতি ইংল্যান্ডের গার্ডিয়ান পত্রিকার লাইফ অ্যান্ড স্টাইল বিভাগের নোটস অ্যান্ড কোয়েরিজে পাঠকদের করা হয় প্রশ্নটি- হোয়্যার ডু স্প্যারোজ গো ইন দ্য উইন্টার বা শীতে চড়ূই পাখি কোথায় যায়? অতিথি পাখির কথা চিন্তা করে উত্তরটা হয়তো আমরা আশা করব বাংলাদেশ। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বরে ছবিসহ পোস্ট করা প্রশ্নটিতে সোমবার বিকেল (১২ জানুয়ারি '১৫) পর্যন্ত পাঠকের ২৮টি মন্তব্যে কেউই বাংলাদেশের নাম বলেননি। ইংল্যান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই সেখানকার স্থানীয় জায়গার কথা বলেছেন। তবে প্রশ্নটির সঙ্গে যে মেইল ঠিকানা দেওয়া হয়েছে তাতে কে কী উত্তর দিয়েছেন জানা নেই।

শীতে অবশ্য আমাদের দেশে অনেক পাখিই যে আসে, তা বলা বাহুল্য। পাখিদের এই আনাগোনা শুধু বাংলাদেশে নয়। পাখিদের বিভিন্ন প্রজাতি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়, বিশেষ করে শীতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে বিশ্বের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যায়। উত্তর মেরু অঞ্চলের পাখিরা দক্ষিণ অঞ্চলে আসে। এখানে আগত অতিথি পাখিরাও অনেক পথ পাড়ি দিয়ে আসে। হিমালয়ের পাশ থেকেই বেশিরভাগ পাখি আসে। অনেকে বলেন, এসব পাখি হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ান ইন্ডিয়ান ফ্লাইওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে। এর বাইরেও ইউরোপ, সাইবেরিয়া থেকে পাখিদের আগমন ঘটে আমাদের দেশে। এরা অতিথির মতো একটা সময়ের জন্য এসে আবার নিজ দেশে চলে যায় বলেই হয়তো এদের অতিথি পাখি বলা হয়।

আসলে অনেক পাখিই বেশি শীত সহ্য করতে না পেরে প্রাকৃতিক নিয়মেই হয়তো অপেক্ষাকৃত কম শীত অঞ্চল খুঁজে চলে যায়। শীতের সময় অনেক অঞ্চলেই মাইনাস ডিগ্রি থাকে ও বরফ পড়ে। তখন খাবারের অভাব দেখা যায়। এ সময় এসে, মার্চ-এপ্রিলের দিকে যখন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করে তখন তারা চলে যায়। আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস, হাওর ও জলাশয় অঞ্চল অতিথি পাখিদের বিশেষ আবাস।
Chorui_Pakhiঅনেকেই আমাদের দেশে আসা এসব অতিথি পাখির মধ্যে লেঞ্জা, জিরিয়া হাঁস, নীলশির, গ্যাডওয়াল, লালশির, পাতারি হাঁস, বামনীয়, চখাচখি প্রভৃতির নাম উল্লেখ করেন। এদের মধ্যে চড়ূই আছে কিনা জানা নেই। অতিথি পাখিদের নিয়ে লেখা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিবেদন, ফিচারেও চড়ূইয়ের কথা পাওয়া যায়নি। হয়তো এ নিয়ে ভালো গবেষণা হলে নিশ্চিত হওয়া যাবে, আসলেই চড়ূই এখানে আসে কিনা। তখন অন্তত গার্ডিয়ানের প্রশ্নের উত্তরে আমরা মেইল করতে পারব_ হ্যাঁ, বাংলাদেশেও শীতের সময় ইংল্যান্ডের চড়ূই পাখি আসে। এটা ঠিক; এমনিতেই চড়ূই পাখি আমাদের প্রতিবেশী ও অতি পরিচিত। বিশেষ করে গ্রামের মানুষের বসবাসের ঘরের চালের কোনায় এদের বাস। কবি রজনীকান্ত সেন হয়তো তা দেখেই তার 'স্বাধীনতার সুখ' কবিতায় চড়ূইয়ের উদাহরণ এনেছেন_ বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই। তবে আমাদের এই চড়ূই পাখি গ্রামেও এখন আর তেমন দেখা যায় না। বাবুই পাখিও তথৈবচ। Babui
অতিথি পাখির কথা বলে হয়তো আমরা গর্ববোধ করতে পারি। শিকারসহ এ পাখির প্রতি নানা অবিচারের কথা আমাদের সামনে আসে। কিন্তু সবার অগোচরে যে আমাদেরই পাখি চড়ূই-বাবুইরা হারিয়ে যাচ্ছে, সেদিকে কি আমরা নজর দিচ্ছি?
ট্যাগঃ , , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।


Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119

Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119

Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119