Mahfuzur Rahman Manik
যন্ত্রণা সমাচার
জানুয়ারী 10, 2013

mahfuzmanik_1357627407_1-mmmmকোনো কোনো কলের জন্য মানুষ অপেক্ষা করে অধীর আগ্রহে। সন্তান যখন দূরে থাকে তার কলটা পাওয়ার জন্য মা কতটা চিন্তায় থাকেন ভাবা যায়? অনেক কলের জন্য মানুষ বছরের পর বছর অপেক্ষা করে। কারও অপেক্ষার প্রহর গোনা শেষ হয়, কারও হয়তো কখনোই শেষ হয় না। একটি ফোন কল তো কেবল কলই নয়। মোবাইল ফোনটা এখন যত সুলভই হোক, ফোনটা বেজে উঠলে তা রিসিভ করার জন্য সবাই ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ব্যাকুলতা হয়তো একেকজনের একেক রকম; তিনি প্রধানমন্ত্রীই হোন আর রিকশাওয়ালাই হোন। কারণ একটা কল একটা খবর। খবরটা মধুর হতে পারে, বিস্বাদও হতে পারে; মৃত্যুর খবর হতে পারে আবার পৃথিবীর নতুন অতিথি আগমনের খবরও হতে পারে; চাকরি পাওয়ার খবর হতে পারে আবার হারানোর হওয়াটাও বিচিত্র নয়। খবরের যত রকমফেরই থাকুক প্রত্যেকটিই ব্যক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ খবরই নিয়ে আসে একেকটি কল। প্রিয়জনকে অনেকে সময়ে-অসময়ে কল করেন। সেটাও গুরুত্বপূর্ণ এবং একেবারে অপ্রয়োজনীয় নয়। কেবল মোবাইল কলের জন্য নয়, এসএমএসের (মেসেজ) ক্ষেত্রেও বিষয়গুলো সমানভাবে প্রযোজ্য।
প্রশ্ন হলো এর বাইরে কি কারও কাছে কোনো কল বা মেসেজ আসে? উত্তরটা হ্যাঁ। প্রয়োজনের বাইরে বিরক্তিকর কল এবং মেসেজও আসে অনেকের কাছে। অনেকে ইচ্ছা করেই মোবাইলে আরেকজনকে বিরক্ত করেন। বিরক্তি এড়াতে মোবাইল অপারেটরগুলো কলব্লকসহ নানা প্রোগাম চালু করেছে। অনেক সময় নম্বরও পরিবর্তন করেন অনেকে। এ তো গেল গ্রাহকের কথা। এ রকম বিরক্তি যদি স্বয়ং মোবাইল অপারেটর রক্ষকের ভূমিকায় ভক্ষক হয় সেটা কীভাবে মানা যায়।এয়ারটেল পাওয়ার প্যাক অফারের মেসেজটা পেলাম একটু আগে। এই অফারের জন্য এয়ারটেল ঠিক কতটা মেসেজ পাঠিয়েছে জানি না, তবে দশটার কম হবে না এটা নিশ্চিত। এরকম নানা অফার রয়েছে তাদের, প্রতিনিয়ত এসব অফারের জন্য তারা মেসেজ পাঠাতে ভোলেন না। প্রথম প্রথম মনে হয় খুশিই হতাম, ভাবতাম আমি বুঝি তাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ গ্রাহক, যাকে সব অফারের আপডেট জানাচ্ছে। কিন্তু দিন দিন মেসেজের পরিমাণ বাড়ছেই। এর ওপর সম্প্রতি তারা ফোন দিতেও ভুলে না। ফোন রিসিভ করলে শোনা যায় গান কিংবা কোনো তারকার গলা। এগুলো রীতিমতো গ্রাহকদের ওপর অত্যাচার। যেটা অনেক আগেই সীমা অতিক্রম করেছে। কেবল এয়ারটেল নয় বাংলালিংকসহ সবগুলো মোবাইল অপারেটর গ্রাহকদের এভাবে বিরক্ত করেই যাচ্ছে।
এ নিয়ে ফেসবুক-ব্লগসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে নিয়মিত লেখা হচ্ছে। এমনকি ফেসবুকে 'মোবাইল অপারেটর থেকে মেসেজ এলেই নগদে ডিলিট_ পড়ার সময় নাই' নামে একটি পেইজ রয়েছে, যার লাইকার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৭১৬। অনেক গ্রাহক বিরক্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে ফোন দিয়ে এগুলো বন্ধও করেন। এরপরও মোবাইল অপারেটরগুলোর এভাবে মেসেজ পাঠানো, কল করা আশ্চর্যের বিষয়ই বটে।
মানুষের জরুরি প্রয়োজনেই এখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন। সবার হাতে ফোন থাকায় এমনিতেই অযাচিত কিংবা অধিক পরিমাণে কল-মেসেজ আসা অস্বাভাবিক নয়। যেটা অনেকের কাজেও বিঘ্ন ঘটায়। এর বাইরে মোবাইল অপারেটরগুলো কল-মেসেজ দিলে সেটা স্পষ্টত বিরক্তিকর। আর মোবাইলটা প্রত্যেকের একেবারে ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে অফারের কল-মেসেজের বিজ্ঞাপন দেওয়াটা শোভনীয়ও নয়। বিজ্ঞাপনের জন্য টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে, রয়েছে পত্রপত্রিকা। এসব মাধ্যমে প্রত্যেকেই অফার জেনে যান। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় সংশ্লিষ্ট অপারেটরের ওয়েবসাইটে গিয়েও জানতে পারেন। এ ছাড়াও প্রত্যেক অপারেটরের যথেষ্টসংখ্যক কাস্টমার কেয়ারও রয়েছে। এসব থাকতে একেবারে গ্রাহকের মোবাইলে কল দেওয়ার বা মেসেজ পাঠানোর কী যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে কোনো অপারেটরের যদি গ্রাহক বেশি হয়ে থাকে, গ্রাহক কমাতে চান আরও বেশি করে পাঠান।

ট্যাগঃ , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।