Mahfuzur Rahman Manik
এই নগরীর বাজেট (ইত্তেফাক,৬জুলাই২০০৯)
মার্চ 17, 2010

ঢাকা। আমাদের এই নগরী। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এই নগরীর বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। বাজেটের পরিমাণ ১ হাজার ৪১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বিশ্বমানের নগরী গড়ে তোলার প্রত্যয়ে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ মোট বরাদ্দের ৭৩ শতাংশ। গত ২০০৮-০৯ অর্থ বাজেটের পরিমাণ ছিল ৮১৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।

১ হাজার ৪১১ কোটি টাকার মধ্যে নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বকেয়া আয়ের খাত থেকে ২৮০ কোটি, সালামি ও ভাড়া বাবদ আয় ৬৮ কোটি, ট্রেড লাইসেন্স থেকে ৪৫ কোটি, রিকশার লাইসেন্স বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ, বিজ্ঞাপন ফি থেকে ১৫ কোটি, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে ১৫ কোটি, গরুর হাট ইজারা থেকে ১৮ কোটি, রাস্তা খনন ফি থেকে ৫৩ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া থেকে ১০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর থেকে ৫৮ কোটি, অকট্রয় ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ, শিশুপার্ক থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ, বিদ্যুৎ বিল থেকে ৯ কোটি ৫০ লাখ ও অন্যান্য খাত থেকে ৭ কোটি টাকা।

মেয়র সরকারি অনুদান থেকে ২০০ কোটি, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে ৩২৫ কোটি এবং পিপিপিভিত্তিক প্রকল্প থেকে ২১৫ কোটি টাকা সাহায্য পাওয়ার আশা করছেন।

বাজেটে ১০২১ কোটি ৩ লাখ টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা মোট বাজেটের ৭৩ শতাংশ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতনভাতা, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতে ২২৫ কোটি টাকা। কবরস্থান, শ্মশান ও বৌদ্ধদের শেষ কৃত্যস্থান নির্মাণ ও উন্নয়নে ৯ কোটি ৫০ লাখ। শিশুপার্ক উন্নয়নে ৩ কোটি টাকা। পার্ক, খেলার মাঠ ও নগরবাসীর বিনোদনে ৬ কোটি টাকা। আঞ্চলিক কার্যালয় ও বাজার নির্মাণ খাতে ২৪ কোটি টাকা। সুইপার কলোনি নির্মাণে ১০ কোটি। কার পার্কিং এ ২ কোটি, পরিবেশ উন্নয়নে ৮ কোটি এবং ডোবা ও জলাশয় উন্নয়নে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ২০ কোটি, জবাইখানা নির্মাণে ১ কোটি, স্বাস্থ্য বিভাগের পরীক্ষাগারে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৪ কোটি ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এবারের বাজেটে নতুন করে কোন কর বাড়ানো হয়নি। তবে কর-এর ক্ষেত্র বাড়ানো হয়েছে। মেয়র ঢাকার ওয়ার্ড ৯০টি থেকে বাড়িয়ে ১৫০ করার সুপারিশ করেছেন। নগরীর প্রাণ নদীগুলোকে বাঁচাতে “স্বাধীন নদী রক্ষা কর্তৃপক্ষ গঠন, ডিসিসিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন করতে এবং ওয়াসাকে ডিসিসির অধীন করতেও সুপারিশ করেন মেয়র। তিনি বলেন, নগরীকে দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তুলতে আগামী ৫০ বছরকে সামনে রেখে একটি মহা পরিকল্পনা হাতে নেয়া প্রয়োজন। প্রতিবছর জুন আসে। আসে নতুন বাজেট। নাগরিক উন্নয়নের বাজেট হলেও উন্নয়ন দৃশ্যমান নয়। নাগরিক জনদুর্ভোগ দুর্ভোগই থেকে যায়। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, যানজট ইত্যাদি দুর্ভোগে নাকাল নগরবাসী। নাগরিকদের দুর্ভোগ কমাতে এ বাজেট কতটা ভূমিকা পালন করবে সেটাই দেখার বিষয়। প্রায় সোয়া কোটি মানুষ নিয়ে আমাদের এ মেগাসিটি। বিশ্বের সর্বাধিক ঘনত্বপূর্ণ মেগাসিটির বাজেট আগামীর সোয়া কোটি নগরবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে কতটা ভূমিকা পালন করবে সেটাই দেখার বিষয়। আমরা আশা করছি বাজেটের সফল বাস্তবায়ন হবে।

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।