Mahfuzur Rahman Manik
শিক্ষানীতির দ্রুত বাস্তবায়ন চাই(যুগান্তর ২৯ অক্টোবর ২০০৯)
মার্চ 17, 2010

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০০৯-এর খসড়া ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেয় কমিটি। শিক্ষানীতির খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। ১৫ অক্টোবর ছিল এ সম্পর্কিত মতামত প্রদানের শেষ দিন। ওয়েবসাইটে শিক্ষানীতি আসার পর এর পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক বাদানুবাদ শুরু হয়। শিক্ষাবিদরা মতামত লেখেন পত্রিকায়। গণমাধ্যমও সরগরম শিক্ষানীতি নিয়ে।
এবারের শিক্ষানীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল কাঠামোর পরিবর্তন। প্রাথমিক শিক্ষা প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী আর মাধ্যমিক শিক্ষা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত। এর পর উচ্চশিক্ষা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রাথমিকের আগে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা। বাদ দেয়া হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক স্তর। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ১ বছর। এটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাধারায় প্রবেশের প্রস্তুতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে আগের কাঠামোগত (প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক, বার্ষিক) পরীক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষায় বিদ্যমান প্রত্যেক ধারার সঙ্গে সুসমন্বয়ের জন্য নির্দিষ্ট বিষয় পড়ানোর সুপারিশ এসেছে। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত (তৃতীয়-অষ্টম) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে বাস্তবমুখী কাজের জন্য কিছু বিষয়ও এসেছে। উচ্চশিক্ষায় গবেষণাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গোটা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞানের প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাটিও জোরের সঙ্গেই উচ্চারিত হয়েছে। নতুন কাঠামো পরিবর্তনে সম্ভাব্য খরচও সরকারকে দেখানো হয়েছে। এসবই যুগোপযোগী, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির জন্য আবশ্যক। যার সমাবেশ এ নীতিতে ঘটেছে। সুতরাং এ নীতির বিরোধিতা অনেকে করলেও এর দ্রুত বাস্তবায়নই সময়ের দাবি।
বিগত ৯টি শিক্ষা কমিশন/কমিটি/নীতির অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। শিক্ষানীতি নিয়ে রাজনৈতিক মতভিন্নতা একটি বাস্তবতা। এরপরও আগের রিপোর্টগুলোর মতো এর অবস্থান হিমাগারে হবে না বলেই আমরা আশা করি। সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০০৯কে পুরোপুরি বাস্তবায়নের যে রোডম্যাপ নির্ধারণ করেছে, তা অনেক দীর্ঘ সময় বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য ধাপে ধাপে কাজ করে শেষপর্যায়ে যেতে হয়তো সে পর্যন্ত লেগে যাবে। তারপরও শেষ সীমাকে আরও কমিয়ে এখন থেকেই কাজে হাত দিতে হবে। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাবিদ ও অভিজ্ঞজনের যেসব পরামর্শ এসেছে, শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের যেসব দাবি এসেছে সেগুলোকে মাথায় রেখে খসড়া শিক্ষানীতি চূড়ান্ত করাই এখন প্রধান কাজ। সব মানুষের দোরগোড়ায় খসড়া নীতিকে পৌঁছে দিতে পারলে ভালো হতো। ওয়েবসাইটে ইন্টারনেটের সুবিধা সবার নেই। যা হোক এখন শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের কাজে হাত দেয়া হোক। এজন্য সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি জনসমর্থনও জরুরি।
http://jugantor.info/enews//issue/2009/10/29/news0177.php

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।