সাক্ষাৎকার :রাশেদা কে চৌধুরী
সাক্ষাৎকার গ্রহণ :মাহফুজুর রহমান মানিক
রাশেদা কে চৌধুরী গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক। ২০০৮ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মহিলা ও শিশু এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অ্যালামনাইর সাবেক সভাপতি রাশেদা কে চৌধুরীর জন্ম ১৯৫১ সালে সিলেটে।
সমকাল : করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার অবশেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
রাশেদা কে চৌধুরী :কয়েকদিন ধরে সংক্রমণের হার যেভাবে বাড়ছে, তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে যেভাবে দেশজুড়ে একসঙ্গে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে, সেখানে আমরা এলাকাভিত্তিক বিকল্প চিন্তা করতে পরতাম।
সমকাল : এলাকাভিত্তিক বিকল্প কী চিন্তার কথা আপনি বলছেন?
রাশেদা কে চৌধুরী : বিগত দুই বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমি মনে করি, গড়ে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়বে। আমরা দেখছি, সংক্রমণের হার রাজধানী কিংবা মহানগরগুলোতে বেশি থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সংক্রমণ ৫ শতাংশের কম হলে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে সংক্রমণের ম্যাপিংটা যথাযথ হওয়া চাই। যেখানে সংক্রমণ বেশি সেটি রেড জোনে থাকবে, সেখানে শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে। সংক্রমণ যেখানে কম, বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে খোলা রাখা সংগত হবে।
সমকাল :গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার কথা আপনি বিশেষভাবে বলছেন কেন?
রাশেদা কে চৌধুরী :আমরা গত দুই বছরে করোনা বিপর্যয় সামলাতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, করোনা সংক্রমণের ঢেউগুলো মহানগরকেন্দ্রিক বেশি থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেভাবে করোনাভাইরাস ছড়ায়নি। সেখানে সংক্রমণ ক্রমাগত কম থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শহরে-মহানগরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারে। শহরের বড় অংশের মানুষ ডিভাইস কিংবা ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করতে পারে। আবার শিক্ষার্থীদের মা-বাবাও তুলনামূলকভাবে বেশি সচেতন থাকেন। ফলে অধিকতর সংক্রমণের কারণে শহরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হলেও শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তারা কোনো না কোনোভাবে বিকল্প শিখন চালিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তাদের অনলাইনে বা বিকল্প কোনো মাধ্যমে পাঠগ্রহণ কঠিন হবে। সে জন্য সংক্রমণ বিবেচনায় যতটুকু সম্ভব গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেতে পারে।
সমকাল : গ্রামেও যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়?
রাশেদা কে চৌধুরী : আমি এলাকাভিত্তিক কিংবা জোন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা বলছি। যেসব এলাকায় সংক্রমণ বাড়বে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে আর যেখানে কম থাকবে সেখানে খোলা থাকবে। যেমন এখন সরকার দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে। আবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে খুলবে- সে জন্য অপেক্ষা না করে বরং দেখবে যেসব এলাকায় সংক্রমণ কম বা ক্রমাগত কমে ৫ শতাংশের নিচে নেমেছে, সেসব এলাকার বিদ্যালয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগেই খুলে দিতে পারে। আর হ্যাঁ, গ্রামেও যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হয় সেখানেও অনলাইনের মাধ্যমে পড়াশোনা অব্যাহত রাখা চাই। দু'বছরের অভিজ্ঞতার পরও আমরা কেন বলব, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ডিভাইস নেই কিংবা ইন্টারনেট সমস্যা। তাদের অনলাইন শিক্ষার যাবতীয় উপকরণের ব্যবস্থায়ও আমাদের নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ হোক কিংবা বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় হোক এ ব্যবস্থা করা চাই।
সমকাল : আমরা দেখছি, শিক্ষার্থীদের জোরদার টিকা কার্যক্রম চলছে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় এ কার্যক্রমও কি বন্ধ করা উচিত?
রাশেদা কে চৌধুরী :সরকার যেভাবে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে জানুয়ারি ২০২২-এর মধ্যে টিকার আওতায় আনার জন্য কাজ করছে, তা নিঃসন্দেহে সাধুবাদযোগ্য। প্রশাসনের হিসাবমতে, ইতোমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অন্তত এক ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমি মনে করি, এখনও টিকা কার্যক্রম চালু রাখা উচিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবস্থাপনাগত সংকট দূর করে যে কোনো মূল্যে শিক্ষার্থীদের টিকাদানের কাজ অব্যাহত রাখাটা এ মুহূর্তে জরুরি।
সমকাল : ১২ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের টিকা নেই। তাদের কথাও তো ভাবতে হবে।
রাশেদা কে চৌধুরী :অনেক দেশে ৫ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও ধাপে ধাপে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। প্রথমে ফ্রন্টলাইনার করোনা যোদ্ধারা পেয়েছেন। তারপর বয়স ৪০ থেকে কমিয়ে এখন ১২ পর্যন্ত এসেছে। সরকার সবদিক বিবেচনা করে ১২ বছরের নিচে বয়সীদের যে টিকাটি দেওয়া নিরাপদ, দ্রুত সেটার ব্যবস্থা করতে পারে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, শিশুরাও কভিডে আক্রান্ত হচ্ছে। সে জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সম্ভব হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
সমকাল : করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পাঠদান ও পরীক্ষা হচ্ছে। এটি কি যথোচিত সিদ্ধান্ত?
রাশেদা কে চৌধুরী :করোনার কারণে এটি একটি আপৎকালীন বাস্তবতা। সারাবিশ্বে বহু দেশ শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নানাবিধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিও তার বাইরে নয়। ইতোমধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাধ্যমিকের এসএসসিসহ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে সামনে। যেহেতু স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু নয়, সেহেতু এ অবস্থায় শিক্ষা যাতে স্থবির হয়ে না পড়ে সে জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না।
সমকাল :করোনায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত সেপ্টেম্ব্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। শিখনশূন্যতা কতটা কাটিয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা।
রাশেদা কে চৌধুরী :শিখনশূন্যতার যে বিষয়টি আপনি বলছেন, এর ব্যাপকতা অনুধাবণ করা সহজ নয়। আমরা বুঝতে পারি ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে, কিন্তু জানি না শিক্ষার্থীরা ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের হাতে বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই। তবে আমরা জানি, আমাদের শিক্ষাক্রমে প্রতিটি শ্রেণির জন্য একটি প্রান্তিক যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। যেমন পঞ্চম শ্রেণির পর শিক্ষার্থীদের কী কী শিখন দক্ষতা অর্জন করতে হবে ইত্যাদি। সেখানে যে ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এর আগে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের প্রসঙ্গ এসেছে। প্রশ্ন উঠছে যে, এখন যদি কেবল বাংলা, ইংরেজি, গণিত বা বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয় বা তাদের শিখন দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয় তবে অন্য বিষয়গুলোর কী হবে। সমাজবিজ্ঞান কিংবা অপরাপর বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই যে শিখনশূন্যতা তৈরি হচ্ছে সেটি পরিমাপ করা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সমকাল : শিখনশূন্যতা পরিমাপ করা সম্ভব?
রাশেদা কে চৌধুরী :শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পুরোপুরি পরিমাপ করা না গেলেও তথ্য-উপাত্তভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে সেটি জানা অসম্ভব নয়। ইউনেস্কো, ইউনিসেফের গাইডলাইন বা অন্য দেশের উদাহরণ নিয়ে স্যাম্পল সার্ভে বা নমুনা জরিপের মাধ্যমে আমরা ঘাটতি নিরূপণ করতে পারি। এ কাজ ব্যানবেইস বা বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো করতে পারে। কোনো বেসরকারি এবং যোগ্যতাসম্পন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানও এটি করতে পারে। এর জন্য বিদেশি পরামর্শক প্রয়োজন নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে বেশকিছু বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা থিংক ট্যাংক তৈরি হয়েছে, যারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজটি করতে পারে। তবে এ ধরনের গবেষণা কেবল রাজধানী বা শহরকেন্দ্রিক হলে চলবে না। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকা, হাওর কিংবা চরাঞ্চলে শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতিও যেন উঠে আসে। সার্বিক চিত্রটি আসা খুবই প্রয়োজন।
সমকাল :গত সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে শিক্ষা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, ঝরে পড়ার চিত্র জানানো হবে। এত মাস পরও আমরা সেটা জানতে পারিনি!
রাশেদা কে চৌধুরী : আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, করোনার কারণে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। প্রশ্ন হলো- কত শতাংশ ঝরে পড়েছে? ঝরে পড়াদের সঠিক তালিকা পাওয়া গেলে তাদের ফিরিয়ে আনতে শিক্ষা প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারত। এ ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার সঠিক হার প্রকাশ না করলে বোঝাও যাবে না, শিক্ষার ওপর করোনার নেতিবাচক প্রভাব আসলে কতটা পড়েছে। সংবাদমাধ্যমে আমরা প্রায়শ দেখছি, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী করোনার সময়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। বৈজ্ঞানিকভাবে খানা জরিপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ না করা হলে তাদের সঠিক চিত্র পাওয়া সম্ভব হবে না।
সমকাল :ঝরে পড়ার চিত্র আমরা কীভাবে পেতে পারি।
রাশেদা কে চৌধুরী : আমি মনে করি, ঝরে পড়াসহ শিক্ষায় সার্বিক ক্ষতি নিরূপণে একটি শিক্ষাশুমারি করার সময় এসেছে।
সমকাল :শিক্ষাশুমারি কী আদমশুমারির মতো?
রাশেদা কে চৌধুরী : শিক্ষাশুমারি অনেকটা আদমশুমারির মতোই হবে। তবে সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে 'হাউসহোল্ড সার্ভে'র মাধ্যমে এ জরিপ কাজ করা সম্ভব না হলে নমুনা জরিপ করা যেতে পারে। সেখান থেকে তথ্য নিতে হবে, তাদের সন্তানরা শিক্ষায় ফিরছে কিনা, কারও বাল্যবিয়ে হয়েছে কিনা। এ জন্য সরকারকে অবশ্যই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। বস্তুত শিক্ষার পূর্ণাঙ্গ ক্ষতি নিরূপণ ও সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই। আমরা দেখেছি, অন্যান্য দেশও এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের কথা বলা যায়, তারা একটি 'ক্যাচআপ ফান্ড'ও গঠন করেছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার ওপর করোনার নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারে।
সমকাল :শিক্ষাশুমারি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক না হয়ে বাড়ি বাড়ি কেন?
রাশেদা কে চৌধুরী :শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক তথ্য গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু দুটো কারণে সেখানে গ্রহণযোগ্যতার ঘাটতি থাকার আশঙ্কা রয়ে যায়। প্রথমত, সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানই হয়তো পূর্ণাঙ্গ এবং সঠিক তথ্য দিতে চাইবেন না। দ্বিতীয়ত, ইতোমধ্যে বেশ কিছু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের তথ্য পাওয়া কঠিন হতে পারে।
সমকাল :করোনাকালীন বাস্তবতা তো রয়েছেই। এ ছাড়াও শিক্ষায় নানা সংকট আমাদের রয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম যে আসছে, তার মাধ্যমে কি আমরা শিক্ষার সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো?
রাশেদা কে চৌধুরী : নতুন শিক্ষাক্রম আসছে। সরকার বৈশ্বিক বাস্তবতা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে রেখে শিক্ষাক্রম সাজাতে চায়। এটি ইতিবাচক দিক। জনমানুষের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে আমাদের শিক্ষাকে সাজানো যেমন দরকার, তেমনি পরীক্ষাকেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের দিকে এগোনো জরুরি। তা ছাড়া সময়ের সঙ্গে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হবে- এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সব মিলিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম জরুরি নিঃসন্দেহে। এর মাধ্যমে আমরা আশা করতে পারি, শিক্ষার অন্যান্য সংকটও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। সে জন্য যথাযথ শিক্ষাক্রম প্রবর্তন এবং সে আলোকে পুস্তকাদি প্রণয়ন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রশাসনকে তৈরি করার বিষয় রয়েছে।
সমকাল : গত বছর আমরা দেখেছি, করোনার মধ্যেও শিক্ষার্থীরা নতুন বছরের শুরুতেই নতুন বই পেয়েছে। এবার দেরি দেখছি।
রাশেদা কে চৌধুরী :বছরের শুরুতে নতুন বইয়ের উৎসব শিক্ষার্থীদের নতুন করে পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলার একটা উপলক্ষ হিসেবে আমরা দেখে আসছি। গত বছর করোনার মধ্যেও শিক্ষার্থীদের বই পেতে এত দেরি হয়নি- এবার যেমন দেরির অভিযোগ উঠেছে। আমরা সংকটকালীন পরিস্থিতি পার করছি এটি সত্য। করোনার অভিজ্ঞতাও আমাদের প্রায় দুই বছর হয়ে গেছে। নানা বিপর্যয়ের মধ্যে বইয়ের ব্যাপারটায় হয়তো এবার তেমন নজরে পড়েনি। টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়েও সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। আশা করব যত দ্রুত সম্ভব সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সমকাল : সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
রাশেদা কে চৌধুরী :আপনাকেও ধন্যবাদ। সমকালের জন্য শুভকামনা।