ফেসবুক আর ইন্টারনেটের মধ্যে সম্পর্ক কী? সাধারণভাবে দেখলে ফেসবুক ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। ইন্টারনেট ছাড়া ফেসবুক অচল। ফলে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই কেবল ফেসবুক ব্যবহার করা সম্ভব। অর্থাৎ কেউ ফেসবুক ব্যবহার করতে চাইলে প্রথমেই তাকে ইন্টারনেটের কথা চিন্তা করতে হবে।
তবে এটা বলাও হয়তো ভুল হবে না, ফেসবুক সবসময় ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল নয়। মোবাইল অপারেটরগুলোর নানা অফারের খবর রাখেন এমন সবাই জানেন, এখন মোবাইলে ইন্টারনেট ছাড়াই ফেসবুক ব্যবহার করা যায়। মেসেজের মাধ্যমেই বিভিন্ন অপারেটর তার গ্রাহকদের ফেসবুক ব্যবহারের সুবিধা দিচ্ছে। এ জন্য ফিও খুব বেশি নয়। মোবাইল অপারেটরের নির্দিষ্ট সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকরা এসএমএসের মাধ্যমেই তাদের স্ট্যাটাস আপডেট করতে পারেন। এর মাধ্যমে বন্ধুদের ওয়ালে কমেন্ট করা, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো, চ্যাট, নোটিফিকেশন, ব্যক্তিগত মেসেজ এমনকি নিউজ ফিডও দেখতে পারেন।
ফেসবুকের জনপ্রিয়তার কারণেই মোবাইল অপারেটরগুলো এটা করেছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে এটা বলা যায়, ফেসবুকের কারণেই ইন্টারনেট জনপ্রিয় হয়েছে। অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টা অস্বীকারের উপায় নেই। এ প্রসঙ্গে এক বন্ধুর পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, আমাদের অনেকে ইন্টারনেট সম্পর্কে জেনেছে ফেসবুকের কল্যাণে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকে ইন্টারনেট চেনেন না অথচ ফেসবুক চেনেন; মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহার করেন। অনেকে আবার ফেসবুক ব্যবহার করতে করতেই ইন্টারনেট চিনেছেন। আবার অনেকের কাছে হয়তো ফেসবুকটাই ইন্টারনেট। মোবাইলে সহজে ফেসবুকের সবকিছু করা যায়। তাই মোবাইলেই অ্যাকাউন্ট খোলেন, অন্যকে বন্ধু বানান, স্ট্যাটাসও দেন।
বিশ্বব্যাপী ফেসবুকের মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশেও মোবাইল ফোন থেকেই বেশি ফেসবুক ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়ে গত বছরের শেষ দিকে ইন্টারনেট কোম্পানি অপেরা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, মোবাইলে প্রতি চারজন অপেরা মিনি ব্রাউজার ব্যবহারকারীর তিনজনই ফেসবুকে প্রবেশ করেন।
দেশে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো মোবাইল এখন সহজলভ্য হয়েছে। বিশেষ কিছু কোম্পানির কম দামে মোবাইল সেটে সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাচ্ছে। আবার ইন্টারনেট ব্যবহার কর যায় এমন অনেক ব্র্যান্ডের মোবাইল সেটও এখন সহজলভ্য হয়ে গেছে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকাংশই যে ফেসবুক ব্যবহার করেন অপেরার প্রতিবেদনই তার প্রমাণ। আবার কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অনেকেই ফেসবুকে আসক্ত।
যদিও আসলে ইন্টারনেট আর ফেসবুক পৃথক কোনো সত্তা নয়। এদের পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতার কথা বলাও হয়তো ব্যাকরণগতভাবে শুদ্ধ নয়। তারপরও আমরা বলছি আসলে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা দেখার জন্যই। দশ বছর পেরিয়ে ফেসবুক যে এত মানুষের হৃদয় জয় করেছে তা বলাই বাহুল্য। ইন্টারনেটে বসলে অনেকেই ফেসবুকে আগে লগইন করেন; ফেসবুক খোলা রেখে অন্য কাজ করেন। অনেকে আবার ফেসবুকের জন্যই কেবল ইন্টারনেটে বসেন। এ রকম ফেসবুক আসক্তি কার কোন পর্যায়ে গেছে সংশ্লিষ্টরাই ভালো জানেন। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, স্ট্যাটাস দেওয়া, কোনো কিছু শেয়ার করা, বন্ধুদের অ্যাক্টিভিটিস দেখা, চ্যাট ও অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার এই ফেসবুক যে অনেকের নেশা হয়ে গেছে, তা বোঝা যাবে যদি এ রকম জরিপ করা হয়- ফেসবুক ছাড়া কে কতক্ষণ থাকতে পারবেন। সত্যি যে আজ ইন্টারনেট ফেসবুকময়।
- ছবি- ইন্টারনেট
আপনার বন্ধুর পর্যবেক্ষণটা ভালো লেগেছে 😀
তয় ফেসবুকের কারনে পোলাপানের পাঠ্যাভ্যাস ভয়াবহভাবে কমে যাচ্ছে। গভীর জ্ঞানের প্রতি এখন কারো কোন আগ্রহ নাই। আগ্রহ নাই সাহিত্যে। বেচা বিক্রি নাই বইয়ের।
অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে , ভবিষ্যতে স্ট্যাটাস সাহিত্য নামে নতুন সাহিত্য আসতে পারে।
যেমন , " আবুল হোসেনের স্ট্যাটাস সমগ্র "- এই টাইপের।