
হিলারি-ট্রাম্প দু'জনের মধ্যে কে কতটা হোয়াইট হাউসের নিকটবর্তী, তা এখনকার আলোচনার বিষয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান এ দুই প্রার্থীর টুকিটাকি নানা বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্ট নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিছুদিন ধরে এ আলোচনায় যুক্ত হয় স্বাস্থ্য। বিশেষ করে ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে নয়-এগারোয় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন অজ্ঞান হয়ে যান। হিলারির নির্বাচনী প্রচার শিবির থেকে জানানো হয়, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। সে সময় রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারির দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করেও কটাক্ষ করতে ভোলেননি। ট্রাম্প বলেছেন, হিলারি এখন বিছানায় শুয়ে আছেন। আরও বলেন, বন্ধুরা, আমি জানি না কী হবে। তবে আপনারা কি মনে করেন, হিলারি আপনাদের সামনে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন?
অবশ্য ৬৮ বছর বয়সী হিলারির স্বাস্থ্য উন্নতির কথা বলে তিনি যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম, সে কথা হিলারির চিকিৎসকের তরফে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তবে হিলারির স্বাস্থ্য যতটা না আলোচনায় এসেছে তার চেয়ে বেশি এসেছে ট্রাম্পের স্বাস্থ্যের বিষয়টি। বিশেষ করে ট্রাম্পের ওজনের ব্যাপারটি ভালোভাবেই সামনে আসে। ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার বিবিসি ম্যাগাজিন লিখেছে, শুড ডোনাল্ড ট্রাম্প'স ওয়েট বি এন ইলেকশন ইস্যু? ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওজন কি নির্বাচনের বিষয় হওয়া উচিত?
আসলে ট্রাম্পের ওজন ইতিমধ্যেই মার্কিন নির্বাচনী প্রচারের একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বলা বাহুল্য, ট্রাম্পও বলেছেন, তিনি ওজন কমাতে চান; তবে তিনি যেভাবে জীবন পরিচালনা করেন তাতে ওজন কমানো খুব কষ্টকর, তারপরও তিনি ১৫ অথবা ২০ পাউন্ড কমাতে চান। বিবিসি লিখেছে- ট্রাম্প একটি টিভি অনুষ্ঠান আয়োজকের কাছে দেওয়া এক চিঠিতে লিখেছেন, তিনি লম্বায় ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি। ওজন ১০৭ কেজি। টেকনিক্যালি তার ওজনকে বলা হচ্ছে 'ওভারওয়েট'। যদিও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চিকিৎসক হ্যারল্ড বর্নস্টেইন বলছেন, প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের স্বাস্থ্য অসাধারণ। তবে ট্রাম্প বোধ হয় একটু বিপাকেই পড়েছেন, যখন প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার সময় তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে কথা ওঠে। কর্তৃপক্ষের কাছে জমা সে রিপোর্ট নাকি লেখা হয় এক টানে, মাত্র পাঁচ মিনিটেই। এ স্বাস্থ্য রিপোর্ট লেখা চিকিৎসক বর্নস্টেইন নিজেই ঘটনাটি ফাঁস করেন। চিকিৎসক অবশ্য এখানেই ক্ষান্ত হননি; বলছিলেন, তার জন্য গাড়ি অপেক্ষা করছিল। এ জন্যই তাড়াহুড়া করে ওই রিপোর্ট লেখেন। তিনি নাকি এমন রিপোর্টই লিখতে বাধ্য হয়েছিলেন, যাতে ট্রাম্পের লোকজন সন্তুষ্ট হন।
৭০ বছর বয়সী ট্রাম্পের স্বাস্থ্য রিপোর্ট যা-ই হোক তার 'ওজন' সবাই দেখছে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিই তার ওজন। এমনকি স্থূলকায়ও। তারপরও যত আলোচনাই হোক ওজন কতটা নির্বাচনের ফ্যাক্টর হবে, সে প্রশ্ন অনেকেরই। এটা ঠিক, মার্কিন দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়ে মানসিক স্বাস্থ্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ইতিপূর্বে নির্বাচনী প্রচার ও বিভিন্ন জায়গায় মুসলমান প্রসঙ্গসহ নানা বিষয়ে যেসব বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সন্দেহ করা অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক নয়। এমনকি ট্রাম্পকে 'পাগল' বলেছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এখন মার্কিন জনগণ চিন্তাভাবনা করেই ক্ষমতাধর দেশের ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট বানাবেন- এটাই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।