রাফিক হারিরির ফুলবানু ও অন্যান্য গল্প পড়ে চরিত্রদের কথা চিন্তা করি। ফুলবানু, হাবিবুল্লাহ, নুরু, হাজেরাদের কথাই বারবার মনে পড়ছে। কত শত চরিত্রের মাঝে কবি চরিত্রটাও ভোলার মতো নয়। ৩৩টি গল্পে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চরিত্র রয়েছে। একেকটা গল্প ধরে হয়তো বর্ণনা করা যাবে। কিন্তু মোটের ওপর কয়েকটি চরিত্র হৃদয়ে দাগ কেটে যায়। চরিত্র কতটা শক্তিশালী তা লেখকের ওপর নির্ভর করে। লেখকের চিত্রায়ন পাঠক অনুধাবনের চেষ্টা করে। কখনও কখনও পাঠকের কাছে তা জীবন্ত হয়ে ওঠে। হয়তো পাঠক নিজের সঙ্গে, সমাজের সঙ্গে, পরিচিতজনের সঙ্গে তুলনা করার চেষ্টা করেন। ভাবেন, ওর জীবনে তো ঠিক এমনটাই ঘটেছে। একইভাবে লেখকও তার অভিজ্ঞতা থেকেই চোখের সামনে ঘটনাগুলোই তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেন। হাজেরার কথাই ধরা যাক। প্রতিনিয়ত শাহবাগের পথে কত হাজেরার দেখাই না আমরা পাই। আমাদের কাছে সে হয়তো হাজেরাই। কিন্তু লেখকের কাছে সে অন্য কিছু। রাফিক হারিরি তাকে কল্পনা করেছেন ছায়াময়ী হিসেবে,যে ঘুরে ঘুরে ফুল বিক্রি করে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতিটি ঘটনার সাক্ষী সে। কিন্তু গল্পটা যে তার কুকুরকে নিয়ে। লেখক যাকে বিপদের ত্রাণকর্তা হিসেবে এনেছেন। সে এক অসাধারণ গল্প। রাফিক হারিরির এ রকম প্রতিটি গল্পই মোড় ঘুরানো। পাঠক গল্পগুলো পড়ে চমৎকৃত না হয়ে পারবেন না।
গল্পগুলোর নামও মনোহারী। অধিকাংশই ছোট ছোট শব্দের। পারফিউম, অলীক ফসল, নক্ষত্রের রাত, অন্ধকারের গান, গহনভিটা, আকাশলীনা, ডুব শ্বাস, বিষণ্ন বলয়, নিশি অভ্র, রেখা, লতা ইত্যাদি। বিচিত্র জায়গা, বিচিত্র মানুষের কথা ফুটে উঠেছে গল্পগুলোতে। গ্রাম-গঞ্জ, শহর এমনকি দেশের বাইরের কথাও এসেছে। তবে লেখকের জন্মস্থানের কারণেই হয়তো ঢাকার নয়াটোলার কথা এসেছে কয়েকটি গল্পে। সে ও নেড়ি কুকুরী তারই একটি। অবশ্য নেড়ি কুকুর, নেড়ি কুত্তা, কুকুরও এসেছে কয়েক জায়গায়। গল্প কোনোটা মানবিক, কোনোটা সামাজিক, কোনোটা মানুষের সম্পর্কের। গল্প বলার ঢং সাবলীল। কথায় মানুষ যেসব শব্দ ব্যবহার করে গল্পেও রাফিক হারিরি স্বাভাবিকভাবে সেগুলো ব্যবহার করেছেন। যেমন কৈলাশপুরের হাট গল্পে তিনি 'বিড়ির পুটকি' ব্যবহার করেছেন। রাফিক হারিরির কল্পনার ঘ্রাণ পাঠক হয়তো পারফিউম গল্পটিতে পাবেন। এর আগে জার্মান চলচ্চিত্র পারফিউম দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। বিখ্যাত সে মুভির শেষ পর্যায়ে এসে সবাই ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে যায়। কিন্তু এখানকার ঘ্রাণ একটু অন্য রকম। অপরাধের ঘ্রাণ ছেলে টের পায় বাবার দামি গাড়িতে; টের পায় সমাজে চলতে ফিরতে। সে এক অসাধারণ কল্পনা। গল্পগুলোর কথকও ভিন্ন। একেকটা একেকভাবে সাজানো। বিশেষ করে লেখক ভূমিকায়ও 'সেকেন্ড পারসন নেরেটিভে' কয়েকটি গল্প লেখার কথা বলেছেন। সেগুলো যথার্থভাবেই গল্প হয়ে উঠেছে। ফুলবানু গল্পটির কথা না বললেই নয়। সমাজের বর্তমান বাস্তবতা গল্পে এত সুন্দরভাবে আসতে পারে, 'ফুলবানু' তার চমৎকার উদাহরণ। ফুলবানুকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য ঢাকা আনা হয়। কিন্তু সে যে কোনোভাবেই হোক হারিয়ে যায়। অচেনা ঢাকায় অবশেষে সে ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। তার ছবিসহ একটা লেখা দেখে সবাই তাকে বেশি করে অর্থ দেয়, যেখানে লেখা- '... নাম তার ফুলবানু। স্বাধীন দেশের সূর্যমাতাদের একজন এই ফুলবানু। পাক বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে...।'
রাফিক হারিরির গল্পগুলো এভাবেই জীবন্ত হয়ে উঠেছে। গল্পগ্রন্থটি পাঠকের ভালো লাগবে বলেই বিশ্বাস।
গল্পগুলোর নামও মনোহারী। অধিকাংশই ছোট ছোট শব্দের। পারফিউম, অলীক ফসল, নক্ষত্রের রাত, অন্ধকারের গান, গহনভিটা, আকাশলীনা, ডুব শ্বাস, বিষণ্ন বলয়, নিশি অভ্র, রেখা, লতা ইত্যাদি। বিচিত্র জায়গা, বিচিত্র মানুষের কথা ফুটে উঠেছে গল্পগুলোতে। গ্রাম-গঞ্জ, শহর এমনকি দেশের বাইরের কথাও এসেছে। তবে লেখকের জন্মস্থানের কারণেই হয়তো ঢাকার নয়াটোলার কথা এসেছে কয়েকটি গল্পে। সে ও নেড়ি কুকুরী তারই একটি। অবশ্য নেড়ি কুকুর, নেড়ি কুত্তা, কুকুরও এসেছে কয়েক জায়গায়। গল্প কোনোটা মানবিক, কোনোটা সামাজিক, কোনোটা মানুষের সম্পর্কের। গল্প বলার ঢং সাবলীল। কথায় মানুষ যেসব শব্দ ব্যবহার করে গল্পেও রাফিক হারিরি স্বাভাবিকভাবে সেগুলো ব্যবহার করেছেন। যেমন কৈলাশপুরের হাট গল্পে তিনি 'বিড়ির পুটকি' ব্যবহার করেছেন। রাফিক হারিরির কল্পনার ঘ্রাণ পাঠক হয়তো পারফিউম গল্পটিতে পাবেন। এর আগে জার্মান চলচ্চিত্র পারফিউম দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। বিখ্যাত সে মুভির শেষ পর্যায়ে এসে সবাই ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে যায়। কিন্তু এখানকার ঘ্রাণ একটু অন্য রকম। অপরাধের ঘ্রাণ ছেলে টের পায় বাবার দামি গাড়িতে; টের পায় সমাজে চলতে ফিরতে। সে এক অসাধারণ কল্পনা। গল্পগুলোর কথকও ভিন্ন। একেকটা একেকভাবে সাজানো। বিশেষ করে লেখক ভূমিকায়ও 'সেকেন্ড পারসন নেরেটিভে' কয়েকটি গল্প লেখার কথা বলেছেন। সেগুলো যথার্থভাবেই গল্প হয়ে উঠেছে। ফুলবানু গল্পটির কথা না বললেই নয়। সমাজের বর্তমান বাস্তবতা গল্পে এত সুন্দরভাবে আসতে পারে, 'ফুলবানু' তার চমৎকার উদাহরণ। ফুলবানুকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য ঢাকা আনা হয়। কিন্তু সে যে কোনোভাবেই হোক হারিয়ে যায়। অচেনা ঢাকায় অবশেষে সে ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। তার ছবিসহ একটা লেখা দেখে সবাই তাকে বেশি করে অর্থ দেয়, যেখানে লেখা- '... নাম তার ফুলবানু। স্বাধীন দেশের সূর্যমাতাদের একজন এই ফুলবানু। পাক বাহিনীর নির্মম অত্যাচারে...।'
রাফিক হারিরির গল্পগুলো এভাবেই জীবন্ত হয়ে উঠেছে। গল্পগ্রন্থটি পাঠকের ভালো লাগবে বলেই বিশ্বাস।