Mahfuzur Rahman Manik
অনেক কাজের কাজি
মার্চ 20, 2014

Technology in the handsমোবাইল, মুঠোফোন, সেলফোন যাই বলি, শব্দটি শুনলে মানসপটে কেবল একটি কথা বলার যন্ত্রই ভেসে ওঠে। এই মোবাইল যে দিনে দিনে আমাদের এ ধারণাকে ভেঙেচুরে অনেক কাজের কাজি হয়ে উঠছে তা কিন্তু খেয়াল করার মতো। কথা বলার যন্ত্র হিসেবে তো বটেই আজ যেন এমন কোনো কাজ নেই যা মোবাইল দ্বারা করা অসম্ভব। মোবাইলের এফএম রেডিওতে যেমন মানুষ খেলার ধারাভাষ্য শুনছেন, তেমনি মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুকসহ নানা কাজ করছেন অনেকে। আবার মোবাইলে মুহূর্তেই টাকা পেয়ে যাচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। মোবাইলের জন্য এখন হাতঘড়ির দেখা মেলা ভার। অন্ধকার রাতে পথ চলতে লাইটের বিকল্প এখন মোবাইল টর্চলাইট। ঘুম থেকে জাগার অ্যালার্ম শোনায় যে যন্ত্রটি, কাগজের ক্যালেন্ডারকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে যে, সে তো মোবাইল। এগুলো বলা চলে এর সাধারণ কাজ।

মোবাইলের মাধ্যমে আরও কত কিছুই না করা যায়। পথ চলতে চলতে আকর্ষণীয় কিছু পেলে তাকে ক্যামেরাবন্দি করতে যে আজ মোবাইলই যথেষ্ট। মেমোরি কার্ডে নানা অডিও-ভিডিও সংরক্ষণের আধার এটি। এফএম রেডিও ছাড়াই এর মাধ্যমে গান শোনা, ছবি দেখার কাজও সারা যায়। শুধু তাই নয় একাকী বসে আছেন, বই পড়তে ইচ্ছা করছে মোবাইলেই ই-বুক রিডারে আপনি সে বই পড়ার স্বাদও নিতে পারবেন। স্মার্টফোন কিংবা উইন্ডোজফোন যেন কেবল মোবাইলই নয়; একেকটি কম্পিউটার। মোবাইলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেমন গোটা দুনিয়াটাই হাতের মুঠোয় আবার এই মোবাইল ব্লুটুথকেই মডেম হিসেবে ব্যবহার করে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় অনায়াসেই। এর বাইরেও নানা কাজের কাজি এই মোবাইল। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কথা আমরা জানি। মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল যেমন জানা যায়, তেমনি এর মাধ্যমে পরীক্ষার আসন বিন্যাস জানা ও তৎসংশ্লিষ্ট তথ্যও সহজে পাওয়া যায়। এখনকার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করতে দিয়ে এসএমএসের মাধ্যমে তার অবস্থান জানা সম্ভব। এ রকম পাসপোর্টসহ অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজে গ্রাহককে ডেলিভারি নিশ্চিতকরণের তথ্যটিও জানানো হয় মোবাইলে এসএমএস দিয়ে। স্বাস্থ্য, কৃষিসহ নানা সচেতনতার ক্যাম্পেইনও যে এখন মোবাইলে চালানো হয়। নানা দিবসে গণসচেতনতামূলক সরকারি অনেক এসএমএসই মানুষ পেয়ে থাকেন। প্রাসঙ্গিকভাবে মোবাইল কোম্পানির অফার সংবলিত এসএমএসের কথাও বলা যায়। যদিও এসব এসএমএসের অধিকাংশ মানুষের কাছেই বিরক্তিকর।

Mobile-E bookঅবশ্য মোবাইল ব্যবহারকারী সবাই যে সমান সুবিধা ভোগ করতে পারছে তা নয়। কার্যত এটা সম্ভবও নয়। এখানেও সামর্থ্যের প্রশ্ন। এক-দেড় হাজার টাকার মোবাইল সেট ব্যবহারকারী নিশ্চয়ই মোবাইলে ক্যামেরা কিংবা ইন্টারনেট পাবেন না। তবে এফএম রেডিও, টর্চলাইট ইত্যাদি ঠিকই পাবেন। যদিও এখন বিভিন্ন কোম্পানির কম দামি অনেক মোবাইলেও ক্যামেরাসহ নানা বিষয় জুড়ে দেওয়া হয়। তারপরও কিন্তু কম দামি সেটেও মোবাইলের নিত্যপ্রয়োজনীয় সব সুবিধাই রয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সর্বশেষ হিসাবে দেশে বর্তমানে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১১ কোটি। অর্থাৎ দেশের প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এটা যে বিশাল সংখ্যা বলাই বাহুল্য। মোবাইল এখন রীতিমতো সব পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় পেঁৗছে গেছে। সরকার চাইলেই পরিকল্পিতভাবে মোবাইলের মাধ্যমে যে কোনো কিছু করতে পারেন। আর থ্রিজির মাধ্যমে এখন মোবাইল বিপ্লব যে আরও সহজ! মানুষের নিত্যসঙ্গী এই মোবাইল নিয়ে এখনও নিরন্তর গবেষণা চলছে। এখনই মোবাইল অনেক কাজের কাজি। আগামী দিনে এটা কোন পর্যায়ে যায় সেটাই দেখার বিষয়।

  • ছবি- ইন্টারনেট
ট্যাগঃ , , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।