শান্ত জিনিসই বুঝি মানুষকে বেশি নাড়া দেয়; সমুদ্রতীরে পড়ে থাকা আইলান কুর্দির নিথর দেহ নাড়া দিয়েছিল বিশ্বকে। এখন নাড়া দিয়েছে নিস্তব্ধ ওমরান দাকনিশের ছবিটি। পাঁচ বছরের শিশু ওমরান একটি অ্যাম্বুলেন্সে বসে আছে। মাথা বেয়ে রক্ত পড়ছে। ধূলি-ধূসরিত গা। মুখের ওপর রক্ত জমাট বাঁধা। ওমরান নির্বিকার। কিন্তু তার ছবি সরব হয়ে ঘুরছে দেশে দেশে, অন্তর্জ্বালে নানা মানুষের টাইমলাইনে।
ওমরান যে যুদ্ধকবলিত সিরিয়ার শিশু, ছবিই সে প্রমাণ দিচ্ছে। সেখানকার আলেপ্পো শহরে তাদের বাস। বুধবার (১৭ আগস্ট) বিমান হামলায় তাদের বাসরত বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে ওমরানকে উদ্ধার করে বসানো হয় অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ারে। সে ঘটনায় ওমরানের প্রায় পুরো পরিবার আহত হয়। এমনকি আহত হওয়া ওমরানের বড় ভাই আলির মৃত্যু হয় শনিবার। আলিও শিশু, ওমরানের চেয়ে মাত্র পাঁচ বছরের বড়। Continue reading
Tag Archives: জীবনের দাম
গণপরিবহন ও জনজীবন
বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছেন। অগণিত যাত্রী। চাতক পাখির মতো একটা বাসের অপেক্ষা। বাস আসবে। সবাই উঠবে। কিন্তু কোথায় কি! বাস আসছে। দিব্যি দরজা বন্ধ করে আছে। বাইরের অপেক্ষমাণ মানুষের আকুতি শোনার সময় নেই। আসলে পর্যাপ্ত যাত্রী আগেই তোলা হয়ে গেছে। আবার অপেক্ষার পালা। বাস আসে। দাঁড়ায় না কেউই। এবার বুঝি প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হবে। কিন্তু বাসের দরজার বাইরেও ঝুলছে যাত্রী। যাত্রী নামবে দু’জন। উঠার জন্য অন্তত ২০ জনের হুমড়ি খেয়ে পড়া। অতঃপর ধাক্কিয়ে পাঁচজনের ওঠা। আপনিও তাদের একজন। কোনোমতে ঝুলে যাচ্ছেন। সময়মতো অফিস ধরতে হবে। কিংবা অফিস শেষে সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরবেন। ঝুলতে ঝুলতে একসময় জায়গা পেলেন বাসের মেঝেতে। দাঁড়িয়ে আছেন। ধীরে ধীরে মানুষ নামছে। অনেক পরে একটা সিটের দেখা পেলেন। বসে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। জীবন বুঝি এমনই। পৃথিবীতে কোথাও নিজের জায়গা করার উদাহরণটা যেন ঢাকার বাসে জায়গা পাওয়ার সঙ্গে মিলে যায়। যেখানে আপনার প্রবেশ কষ্টসাধ্য সেখানে অনেক কষ্টে আপনাকে কোনোমতে দাঁড়াতে হবে, তারপর ধীরে ধীরে সেখানে আপনার জায়গা হবে। Continue reading
আফগান হাসপাতালে হামলা ও পাঁচ প্রশ্ন
হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গেছে। বলা চলে এটি শেষ হয়ে গেছে। তবে রেখে গেছে পাঁচটি প্রশ্ন।
এক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাসপাতালে হামলা করল কেন? Continue reading
ভালো মানুষের উদাহরণ
স্মৃতির টাইম মেশিন
মানুষের জীবনে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে। কোনোটা এমনি মনে থাকার মতো। কোনোটা মনে রাখতে সবাই লিখে রাখে। কোনোটা মনে রাখার চেষ্টা করে। আবার কোনোটা হারিয়ে যায়। মানুষের স্মৃতি অনেকটা টাইম মেশিনের মতো। যত বুড়োই হোক পেছনে ফিরে তাকালে অনেক কিছুই অনায়াসে ভেসে ওঠে মনের আয়নায়। ছোটবেলায় কোন রঙের কাপড় পরতেন তা কারও মনে না-ও থাকতে পারে। কিন্তু ছোটবেলার স্কুলের কথা তার ঠিকই মনে হবে। এ রকম জীবনের প্রত্যেকটি ধাপের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সবারই মনে থাকবে। মনে থাকবে ছোটবেলার বন্ধু-বান্ধবের কথা। নিজ বাড়িটার কথা। কোথায় কোথায় ছিলেন ইত্যাদি। একইসঙ্গে কারও সময়কে সঙ্গে নিয়েও টাইম মেশিনের মাধ্যমে যে কেউ ফিরে যেতে পারেন অতীতে। এই সময় তিনি এখানে ছিলেন। তারপর পাঁচ বছর আরেক জায়গায়। এরপর অন্যখানে। এভাবে মনে মনে হয়তো একটা জীবনীগ্রন্থও দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারেন। Continue reading
‘গ্রেড’ নয়, আপনিই বড়
‘ইউ আর নট ইউর মার্কস!’ শিরোনামে বিবিসি ট্রেন্ডিংয়ে ৩০ মের প্রতিবেদনটি ভারতের কৌতুক অভিনেতা বীর দাসের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত। ইউটিউবে তার ‘অন ইউর মার্কস’ নামের ভিডিওটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। আসলে ভিডিওটি তিনি এমন সময়ে প্রকাশ করেন যখন ভারতে একটি পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। যেখানে দেখানো হয়েছে, পরীক্ষার ফল তেমন কিছু নয়। বীর দাস বরং তিন মিনিটের ভিডিওতে জীবনের অনেক কিছু দেখিয়েছেন। স্বপ্ন, মা-বাবা, মানুষ, যুদ্ধ, ভালোবাসা ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রে ভিডিওটি আমাদের জন্যও প্রযোজ্য। সম্প্রতি আমাদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এ পরীক্ষায় অনেকে জিপিএ ৫ পায়নি বলে কষ্ট পেয়েছে। আবার ১৩ ভাগ শিক্ষার্থী যাদের বলা হচ্ছে ‘অকৃতকার্য’, তাদের মনও ভালো থাকার কথা নয়। আর ফল নিয়ে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে খবর সবার মন খারাপ করে দেয় তা হলো Continue reading
চলমান জীবনের ভাসমান গল্প
টাইমস অব ইন্ডিয়ার ব্লগে সম্প্রতি নিনা সুদ লিখেছেন, লাইফ মাস্ট গো অন। অবশ্য কেউ লিখুক আর না-ই লিখুক, এটাই বোধহয় নিয়ম_ জীবন চলমান। কারও কিংবা কোনো কিছুর জন্য জীবন থেমে থাকে না। হয়তো নানা সময়ে জীবনের নানা গতিপথ তৈরি হয়; হয়তো নানা ঘটনা জীবনে দাগ কেটে যায়; হয়তো কিছু বিষয়ে জীবনের অপ্রাপ্তি থাকে; হয়তো চাওয়া-পাওয়ার মাঝে ব্যাপক ফারাক সৃষ্টি হয়; তারপরও জীবন চলে যায় জীবনের পথে। এ পথে ছিটকে পড়ার দৃশ্য কিংবা উদাহরণ ব্যতিক্রম।
কাউকে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করলে খারাপের চেয়েও বেশি উত্তর আসবে, ভালোই আছি। কোনো কারণে দীর্ঘশ্বাস থাকলেও ভালোর কথাই বলবেন সবাই। তার চেয়েও বড় কথা হলো, মানুষের স্বপ্ন। এ স্বপ্নই বোধহয় বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় প্রেরণা। মানুষ যত কষ্টেই থাকুক, ভাবে একদিন তার অবস্থার পরিবর্তন হবে। বাঁধা অবস্থায় সবচেয়ে অসহায় মানুষটিও বলবে, ‘ছাড়া পেয়ে নিই, তখন দেখাব মজা।’ Continue reading
জীবন এবং খেলা
বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে অন্তত খেলার পরিভাষাগুলো নতুন করে সামনে এসেছে। এর সঙ্গে মানুষের জীবনের পরিভাষার অনেক মিল। খেলার সঙ্গে এ রকম নানা মিল থেকেই হয়তো জীবনকেও একটি খেলা হিসেবে দেখেন অনেকে। একে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করতে, বলতে, লিখতে ‘জীবনখেলা’ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। অস্বীকার করার উপায় নেই, খেলায় জয়-পরাজয় আছে; জীবনেও আছে। ক্ষণে ক্ষণে খেলার রঙ বদলায়; জীবনেরও বদলায়। খেলায় কেউ হিরো, কেউ জিরো; জীবনেও তা-ই। কেউ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন, কেউ পারেন না; জীবনেও এ রকম। কেউ ঝড়ো ইনিংস খেলেন, কেউ গুটি গুটি পায়ে এগোন; জীবনেও তা দেখা যায়। Continue reading
পয়সার পুনরাবির্ভাব!
নতুন প্রজন্মের কাছে পয়সার হিসাব অনেকটা ঐতিহ্যের মতো। এক-পাঁচ-দশ এমনকি পঁচিশ পয়সাও দেখার সুযোগ অনেকের হয়নি হয়তো। অনেকে হয়তো দেখে থাকবেন জাদুঘরে; বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকার জাদুঘর ও মুদ্রা প্রদর্শনীতে। মুদ্রা সংগ্রহের শখ কিংবা সংগ্রহ করে রাখা অন্য কারও কালেকশন থেকেও কেউ দেখে থাকতে পারেন। অথচ এসব মুদ্রার এক সময় ব্যাপক প্রচলন ছিল। দাদা-দাদি, নানা-নানিদের গল্প থেকে অনেকে জানেন, তাদের সময় পাঁচ-দশ পয়সায় অনেক কিছু পাওয়া যেত। এক-দুই টাকায় ব্যাগভর্তি বাজার করা যেত, যা এখন কল্পনা করাও কঠিন। যেখানে পঁচিশ-পঞ্চাশ পয়সা থাক, এক টাকায়ও তেমন কিছু পাওয়া যায় না; যেখানে এক টাকাই দুষ্প্রাপ্য, এর বদলে অনেক জায়গায় যেখানে চকোলেট ধরিয়ে দেয়, সেখানে পয়সার কথা অবাস্তবই বটে। Continue reading