সাক্ষাৎকার: আলী মো. আবু নাঈম
শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষের অন্যতম সম্পাদক ও সংকলক আলী মো. আবু নাঈম। ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগারের সঙ্গে শুরু থেকেই যুক্ত। বর্তমানে তিনি পাঠাগারটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আবু নাঈম কাজ করেছেন সেন্টার ফর এশিয়ান আর্টস অ্যান্ড কালচারে। দীর্ঘ সময় তিনি বাসদের মুখপত্র ‘ভ্যানগার্ড’ প্রকাশনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সরকারি বাংলা কলেজ ও ঢাকা কলেজে পড়াকালে বামপন্থি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
সমকাল: কোন প্রেরণা থেকে আপনি ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ’ রচনার কাজে হাত দেন?
আলী মো. আবু নাঈম: আমি যখন সরকারি বাংলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করি তখন শহীদজায়া জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনে যুক্ত হই। এরপর ২০১৩ সালের গণজাগরণসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রায় সব আন্দোলনে আমরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। মূলত সে চেতনা থেকেই দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সব শহীদের প্রতি আমার এক ধরনের ভালোবাসা রয়েছে। বিশেষ করে ওই সময় যেসব বুদ্ধিজীবী শহীদ হন, তাদের অবদান বর্তমান প্রজন্ম যাতে মনে রাখে, সেটা সবসময়ই অনুভব করেছি।
সমকাল: কখন আপনারা এ কোষ রচনার কাজ শুরু করেন।
আবু নাঈম: ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগার’ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন ও চেতনা সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের ৩ মার্চ এ পাঠাগারের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে আমরা একটি প্রামাণ্য বই প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিই। সে অনুযায়ী আমরা পাঠাগারের টিম এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করি ২০১৭ সালের শেষ দিকে এবং ২০১৯-এর একুশের বইমেলার আগেই আমরা পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করতে সক্ষম হই।
সমকাল: বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা সহস্রাধিক শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা দেখেছি। শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষে আপনারা ৩২৯ জনের কথা লিখেছেন।
আবু নাঈম: আপনি ঠিকই বলেছেন, ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন দেশের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’ পুস্তিকায় ১০৭০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর কথা বলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে ১২ শতাধিক শহীদ বুদ্ধিজীবীর বিষয়েও প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত বাংলা একাডেমির ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থে’ ২০১ জনের পরিচিতি প্রকাশ হয়। ৩২৯ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর জীবনবৃত্তান্ত, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ সংখ্যাটি আমরা নিজেরা ঠিক করিনি, বরং ৩২৯ জনের তথ্যই আমরা পেয়েছি। সেই আলোকেই গ্রন্থটি রচিত হয়েছে।
Continue reading