Mahfuzur Rahman Manik
মাফলারপ্রীতি!
ডিসেম্বর 11, 2016

ঢাকায় শীত বলা চলে আসি আসি করছে। ক্যালেন্ডারের হিসাবেও হেমন্তের শেষ দিনগুলো পার করছে নগরবাসী। রাস্তাঘাটে এখনও তেমন শীতের পোশাক দেখা যায় না। যদিও অন্যান্যবার আরও আগেই পুরোদমে শীত পড়েছে। ঢাকায় শীতের অবস্থা যা-ই হোক প্রতিবেশী দিলি্লতে যে শীত পড়ে গেছে, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালই তার প্রমাণ। এ বিষয়ে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, অ্যাজ উইন্টার হিটস দিলি্ল, অরবিন্দ কেজরিওয়াল আনপ্যাকস হিজ মাফলার। দিলি্লতে শীত এসেছে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার মাফলার বের করেছেন। ভারতের আম আদমি পার্টির প্রধান কেজরিওয়াল কেবল নিজে মাফলার পরেছেন তা নয়, বরং অন্যদেরও শীতের আগমনে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। তিনি হিন্দিতে টুইট করেছেন, 'ঠাণ্ডা পড়ে গেছে, মাফলার বের হয়ে গেছে; আপনিও নিজের খেয়াল রাখবেন।' কেজরিওয়ালের টুইটে তার দলেরই সহকর্মী আশুতোষ মজা করে পাল্টা টুইট করেছেন, 'যখন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মাফলার বের করে ফেলেছেন, তখন দিলি্লতে আনুষ্ঠানিকভাবেই শীতের ঘোষণা হয়ে গেল।' তবে টাইমস অব ইন্ডিয়া কেজরিওয়ালের মাফলারপ্রীতির কথাও লিখেছে। ২০১৩ সালে শীতের মধ্যে দিলি্লর বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারকালে তাকে মাফলার পরিহিত দেখা গেছে। সে নির্বাচনে তিনি জিতেছিলেন, যদিও ৪৯ দিনের মাথায় তিনি পদত্যাগ করেন। পরে আবার নির্বাচনে জিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন। তখন বলা হয়েছিল, মাফলারম্যান রিটার্নস মানে মাফলারমানব কেজরিওয়াল আবার ফিরলেন। এবারও তার মাফলার টুইটের পর সংবাদমাধ্যম শিরোনাম করছে, মাফলারম্যান রিটার্নস!
যাহোক, এটা অস্বাভাবিক নয় যে, কেজরিওয়ালের মাফলারপ্রীতি অন্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। তবে ঢাকার চিত্র ভিন্ন। এখানে শীতের সময়ও যে খুব মাফলার দেখা যায় তা নয়। হাল ফ্যাশনে মাফলারের বদলে এসেছে শীতের টুপি। এসেছে হুডি। নানা ধরনের হুডি এখন তারুণ্যের প্রিয়, যাতে মাথা ও কান ঢাকা থাকে। তাতে শরীরও বাঁচে, মাফলারের কাজও সারে। মাফলারের বিশেষত্ব আছে বটে, এটি দিয়ে মাথা, কান ও গলা খুব ভালোভাবে পেঁচিয়ে রাখা যায়। বেশি ঠাণ্ডায় বা শীতে মাফলারের কার্যকারিতা অনন্য।
রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের নিজস্ব কিছু বিষয় আছে, যেমন মওলানা ভাসানীর লুঙ্গি, গান্ধীর হাঁটু অবধি ধুতি প্রভৃতি। দলবদ্ধভাবেও আছেmuffler। মুসলিম লীগের আচকান, আওয়ামী লীগের মুজিবকোট, বিএনপির সাফারি ইত্যাদি। মাফলারও হয়তো কেজরিওয়ালের তেমন কিছু। ইতিমধ্যে তাকে মাফলারম্যানও বলা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে শীতে কেজরিওয়ালের মাফলার বের করার টুইট অনেকে ভালোভাবে নাও দেখতে পারেন। বিষয়টি যে হাসি- ঠাট্টার পর্যায়ে পড়ে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার এই মাফলারকাণ্ড তাকে সংবাদ শিরোনাম করেছে। অবশ্য কেজরিওয়াল নাছোড়বান্দা। মাফলার নিয়ে তিনি এর আগেও জনসমক্ষে কথা বলেছেন, গত ডিসেম্বরে দিলি্ল সেক্রেটারিয়েটে সিবিআই হানার পরে বিস্তর সমালোচনার মাঝেও কেজরিওয়াল মজা করে বলেন, 'চারটি বেনামি মাফলার ছাড়া ওখানে ওরা কিছুই পাবে না।' কেউ কেউ বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তাদের মতে, কেজরিওয়াল আম আদমি পার্টির নেতা, মাফলারও আম আদমি তথা সাধারণ মানুষের প্রতীক। এটা ঠিক, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় সামাজিক মাধ্যম ওয়েবসাইটগুলোতে মানুষের বিচরণ বেড়েছে। সেখানে অনেকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পোস্ট দেন, তেমনি অগুরুত্বপূর্ণ, হাসি-ঠাট্টার এমনকি বিব্রতকর বিষয়ও শেয়ার করেন। ব্যক্তির রুচি এখানে প্রকাশ পাচ্ছে। অবশ্য স্বাধীনতা, পছন্দ-অপছন্দ প্রত্যেকেরই আছে। এ জন্যই তো কেজরিওয়াল টুইট করছেন, 'হোক তার বিষয় মাফলার'।

 

 

ট্যাগঃ , , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।