ধূলিঝড়ের অভিজ্ঞতা অনেকের থাকার কথা নয়। নদী-নালা-খাল-বিল-পুকুরের বাংলাদেশে মরু অঞ্চলের মতো ধূলিঝড় হয় না। প্রবাসে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকেন, তাদের সে অভিজ্ঞতা হতে পারে। বই পড়ে কিংবা সংবাদমাধ্যমের কল্যাণেও অনেকে জানতে পারেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমেও যে কেউ দেখতে পারেন। প্রচণ্ড বেগের বাতাসে কীভাবে ধূলি ওড়ে; ঘূর্ণিঝড়ের মতো ধূলিঝড় কীভাবে দিনকে রাতের অন্ধকারে পরিণত করে; কীভাবে পথিক ধূলিঝড়ের কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করেন; অপ্রতিরোধ্য ধূলিঝড়ে কীভাবে মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়। ধূলিঝড়ের খবর হিসেবে কাঠমান্ডু আমাদের সামনে এসেছে। প্রতিবেশী নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সোমবারের ধূলিঝড়ের প্রভাব ঢাকায় এসে পেঁৗছেনি হয়তো; কিন্তু প্রতিবেশী হিসেবে খবরটি গুরুত্ববহ। কাঠমান্ডুর পত্রিকা লিখেছে, সেদিন বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় এ ঝড় ওঠে। ৪৫ মিনিটের ধূলিঝড়ে গোটা এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। মানুষ রাস্তার মাঝখানে যানবাহন থামিয়ে দেয়। হাজার হাজার গণপরিবহন রাস্তায় আটকা পড়ে। সেখানকার ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। বিমানের রানওয়ের ধুলা পরিষ্কার করার পর তা খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। পশ্চিম দিক থেকে ওঠা এ ধূলিঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮২ কিলোমিটার। ধূলিঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ার দৃশ্যও দেখা গেছে।
সাধারণত শুষ্ক বা আধা-শুষ্ক ও অনুর্বর অঞ্চলে ধূলিঝড় ওঠে। এ ঝড়ে বাতাসের প্রচণ্ড গতির সঙ্গে ধূলিকণা আলগা হয়ে উড়তে থাকে। এভাবে এক জায়গার মাটি আরেক জায়গায় গিয়ে পড়ে। বিশেষত উত্তর আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপে ধূলিঝড় বেশি দেখা যায়। Continue reading
Monthly Archives: মার্চ ২০১৬
রূপান্তরিত ইন্ডিপেনডেন্ট
পাঠকের দরজায় ব্রিটেনের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের সর্বশেষ ছাপা সংস্করণ হাজির হয় শনিবার। ৩০ বছরের এ দৈনিকটির অবশ্য মৃত্যু হয়নি, তার স্বত্বাধিকারীর ভাষায়, রূপান্তর ঘটেছে; প্রিন্ট থেকে অনলাইনে এসেছে। ২০০৮ সাল থেকে এর অনলাইন সংস্করণ চালু হওয়ার পর থেকে দুটি মাধ্যমেই এটি প্রকাশিত হয়ে আসছে। এখন ছাপা সংস্করণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেবল অনলাইনেই পাওয়া যাবে পত্রিকাটি। ১৯৮৬ সালে ৭ অক্টোবর ব্রডশিট কাগজে প্রথম ছাপা সংস্করণ প্রকাশ হয় দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট। যার ডাকনাম ইন্ডি। ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফের তিন সাংবাদিক চাকরি ছেড়ে দিয়ে প্রকাশ করে ইন্ডি। অল্প সময়ে এটি বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা পায়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তার প্রচারসংখ্যা ব্যাপক হ্রাস পায়। উইকিপিডিয়া দেখাচ্ছে, ২০১৫ সালের জুন মাসে ইন্ডির সার্কুলেশন ৫৮ হাজারের নিচে নেমে আসে। অথচ ১৯৯০ সালে তা ছিল চার লাখ।
ছাপা সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা অনেক দিনের। ইন্টারনেটের ব্যাপকতায় শঙ্কাও বাড়ছে। Continue reading
নদীর বাঁকে জীবনের সুর
বলেশ্বরী বা বলেশ্বর (Baleswar) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিরোজপুর, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলার একটি নদী। একে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মিহির সেনগুপ্ত। এত নিখুঁত বর্ণনা যে, এটি পড়লে কেউ হয়তো ভাবতেই পারবেন না_ লেখক বাংলাদেশের নন। আসলে বাংলাদেশে বাস না করলেও লেখকের জন্ম কিন্তু বলেশ্বরীর কাছেই। বরিশালে তার জন্ম দেশবিভাগের অব্যবহিত পরই, ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ১৯৬৩ সালে পাড়ি জমান পশ্চিমবঙ্গে। উপন্যাসটি হয়তো তারই জীবন কাহিনী কিংবা তার দেখা কারও। উপন্যাসে যদিও মূল চরিত্র সুপর্ণ ও শ্যামশ্রী। হয়তো পশ্চিমবঙ্গ থেকেই তারা এসেছেন। ‘বলেশ্বরী পেরিয়ে’ কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য শ্যামশ্রী বাপের বাড়ি যাবে। বাংলাদেশে বছরে এক-দুইবার আসে। বলেশ্বরী নদীর ঘাট থেকেই কাহিনী শুরু। ঘাটে এসেই সুপর্ণ ও শ্যামশ্রী তাদের পরিচিত মুচকুন্দকে পেয়ে যায়। মুচকুন্দকে নিজেদের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। বলেশ্বরী পেরিয়ে গাড়ি চলছে গন্তব্যে, আর চলছে গালগল্প। এভাবে অনেকটা পারস্পরিক কথাবার্তা, আলোচনার ঢঙেই শেষ হয় উপন্যাসটি। গাড়িতে মুচকুন্দ ও তারপর বাড়িতে পেঁৗছে পরিচিত নানা মানুষের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথোপকথন। যেখানে উঠে এসেছে এখানকার সমাজ জীবন, গ্রামীণ জীবন, সাম্প্রতিক পরিবর্তন, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ, অতীত জীবনের স্মৃতিচারণ ইত্যাদি। বোদ্ধাদের কাছে হয়তো উপন্যাসটি দুই বাংলার মানুষের সম্পর্ক, সম্পর্কের সূত্র ও ঐতিহাসিক বিষয় হিসেবেও হাজির হবে। ‘বলেশ্বরী পেরিয়ে’ এটি পেঁৗছে গেছে মানুষের জীবনে। Continue reading
শতাব্দীর প্রশ্ন ও মন্ত্রীর জবাব
শতাব্দী জায়গামতোই প্রশ্নটি করেছিল। শনিবার শতাব্দীর সে প্রশ্ন সংবাদমাধ্যম ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রোববার সমকালসহ অন্যান্য সংবাদপত্রের মাধ্যমে তা অন্যদের কাছেও পেঁৗছে যাওয়ার কথা। ‘মিনিস্টার, আই হ্যাভ এ কোয়েশ্চেন’-এর মাধ্যমে শতাব্দী কেবল তার প্রশ্নটিই তুলে ধরেনি বরং ভোগান্তির শিকার আরও অনেকের কথাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে তুলে ধরেছে।
ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শামসুন নাহার শতাব্দীর ক্ষোভ হয়তো অনেক দিনের; হয়তো এ দিনটির জন্যই সে অপেক্ষা করেছিল। শনিবার দুপুরে স্কুল শেষে শতাব্দী যখন বাস না পেয়ে হাঁটছিল তখনি মন্ত্রীর সঙ্গে তার আচমকা সাক্ষাৎ। মন্ত্রী তখন মিটার ছাড়া সিএনজি অটোরিকশা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। শতাব্দী হয়তো ভেবেছিল এটাই মোক্ষম সুযোগ। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাই মন্ত্রীকে ইংরেজিতে জানাল, তারও একটা প্রশ্ন আছে। Continue reading
পিপার স্প্রে উপহার!
পিপার স্প্রের পরিচয় অনেকে অনেকভাবে পেয়েছেন। তবে কেউ ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন বলে মনে হয় না। এটি যখন দমনের হাতিয়ার; অধিকার রক্ষায় রাস্তায় নামলে যখন এর সম্মুখীন হতে হয়; আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে যখন এটি মোক্ষম অস্ত্র; পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শেষ ভরসা এই পিপার স্প্রে; তখন এর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা হওয়াই স্বাভাবিক। গোল মরিচ বা এ রকম মসলাজাতীয় পদার্থের গুঁড়া মিশ্রিত তরলের নিক্ষেপ বা পিপার স্প্রে বন্ধের দাবিও অনেকের। এটি বন্ধে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার ঘটনা আমরা দেখেছি। এমনকি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে এক আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া পিপার স্প্রের কারণে শিক্ষক মারা যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। অথচ বুধবার সে পিপার স্প্রে-ই কি-না উপহার হিসেবে দেওয়ার খবর দিয়েছে বিবিসি।
উপহার হিসেবে প্রত্যেকে তার প্রিয় জিনিস দেন, কিংবা যাকে তা দেবেন তার পছন্দও এখানে বিবেচনার বিষয়; প্রয়োজনও এখানে ব্যাপার হতে পারে। এখানে হয়তো তা-ই ঘটেছে। ৮ মার্চ মঙ্গলবারের নারী দিবসে ‘ভয়ঙ্কর’ এই পিপার স্প্রে উপহার দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। Continue reading
শিক্ষকদের সৃজনশীল হওয়ার পথ কেন রুদ্ধ
শিরোনামের প্রশ্নটি লেখকের মতো হয়তো অনেকেরই। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে যখন উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৪১ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষকদের ব্যর্থতা সামনে আসছে। বাস্তবে শিক্ষকদের এ ব্যর্থতার পেছনে যে কিছু কারণ রয়েছে, যেগুলো সত্যিকার অর্থে শিক্ষকদের সৃজনশীল হতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা দেখার বিষয়।
বলা প্রয়োজন, গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষায় নতুন পদ্ধতি চালুর দাবি ছিল অনেক দিনের। বিশেষ করে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ঘাড়ে যখন কোচিং-নোট-গাইডের মতো ছায়া শিক্ষা চেপে বসছিল, তখন দেশের শিক্ষাবিদদের সহযোগিতায় সরকার চালু করে সৃজনশীল পদ্ধতি। এ পদ্ধতি চালু হওয়ার সময় প্রত্যাশা করা হয়েছিল, দেশ থেকে কোচিং-নোট-গাইড উচ্ছেদ হবে, মুখস্থবিদ্যার বাইরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সৃজনশীল হবে, শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটবে। যদিও ২০০৮ সালে চালু হওয়া সৃজনশীল পদ্ধতির আজকের বাস্তবতা সংশ্লিষ্টদের অজানা নয়। কোচিং-নোট-গাইডও সৃজনশীল (!) হয়ে দিব্যি চলছে। কাগজে-কলমে খোদ প্রশাসনের প্রতিবেদনেও তার দুরবস্থার চিত্র সংবাদমাধ্যমে এসেছে। Continue reading
গ্রাম জীবনের উপাখ্যান

তার পরও মায়াই প্রধান। মায়ার কাজল যেন তা-ই বারবার প্রমাণ করেছে। বজর উদ্দির হাতে টাকা নেই, মাথায় রাগ। রাবেয়াকে মারতে গিয়ে লুঙ্গি ছিঁড়ে ফেলে। রাবেয়ার খেদ নেই। বরং বলে ‘লুঙ্গিডা খুইলা রাখেন, ছিলাইয়া দিমু’। বজর উদ্দি সে মায়া বোঝে না। জুয়াই তার সব। সে বোঝে না, তার জন্য সন্তানরা সমাজে মুখ দেখাতে পারে না। রাবেয়া মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনো রকম খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করে। বজর উদ্দি পরিবারের এ দুঃসময়ে একজনই বোধহয় সহানুভূতিশীল, সে তার ভাইয়ের ছেলে হারুন। এর পেছনের ‘কিন্তু’টা যে বজর উদ্দির মেয়ে বিলু। Continue reading