Mahfuzur Rahman Manik
নাবিক আমাকে দিয়েছে ...
Bangladesh-Seafarerমানুষের পেশা, শখ, কর্ম বিচিত্র। অকুতোভয় মানুষ নানা বিষয় আবিষ্কার করেছে। মানুষ যেমন স্থল জয় করেছে, একই সঙ্গে জলও তার আয়ত্তে এনেছে। ভাস্কো-দা-গামার আবিষ্কারের কথা ইতিহাসে লেখা আছে। যিনি সর্বপ্রথম ইউরোপ থেকে সমুদ্রপথে ভারতে আসেন এবং ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য পথ আবিষ্কার করেন। পর্তুগিজ ভাস্কো-দা-গামার মতো নাবিকরাই সমুদ্রজয়ের মূল কারিগর। নাবিকরা কেবল নিছক জাহাজই চালান না, এর মাধ্যমে তারা নানাভাবে অবদান রাখেন। আজকের সমুদ্র নাবিক দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা ওয়েবসাইটে তাই বলছে, সমুদ্র নাবিক তারাই যারা খাদ্য, বস্ত্র, উপহারসহ অন্যান্য সামগ্রী, এমনকি মৌলিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমাদের কাছে পেঁৗছান। প্রত্যহ আমরা কোনো না কোনোভাবে তাদের ওপর নির্ভরশীল। সংস্থাটি বলছে, 'এত কিছুর পরও আমরা তাদের ধন্যবাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ পাই না।' মজার বিষয় হলো, এ বছর সংস্থাটি দিবসটির থিম ধরে সে সুযোগ করে দিয়েছে_ 'সিফেয়ারারস ব্রট মি...' সমুদ্র নাবিক আমাকে এনে দিয়েছে...। এই ডটেড চিহ্ন পূরণ করবেন আপনিই, http://dayoftheseafarer2014.imo.org/index.php ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার জন্য কী এনেছে লিখে তাদের ধন্যবাদ দিতে পারেন।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী নাবিক হিসেবে যোগ দেওয়ার বিজ্ঞাপনে লিখছে_ রোমাঞ্চকর সমুদ্রপথে আসুন নিজেকে গড়ি দেশ সেবার দৃঢ় শপথে। এই সমুদ্র নাবিক জীবন যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও বটে। সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশি মাড়িয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার মধ্যে যেমন রোমাঞ্চ আছে, নতুন জায়গা আবিষ্কারের যেমন প্রাপ্তি আছে, তেমনি নানা ঝুঁকিও আছে। সামুদ্রিক জলদস্যু আছে, জলোচ্ছ্বাস আছে, জলদানব থাকাও হয়তো বিচিত্র নয়। সম্প্রতি সাড়ে তিন বছর পর সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া আমাদের সাত নাবিকের দেশে ফেরার খবর আমরা দেখেছি। তবে এসব ঝুঁকি সত্ত্বেও আমরা 'সমুদ্রের নেশা'র কথা জানি।
আসলে সমুদ্র তো কেবল জলরাশিই নয়। সমুদ্র যেমন তেল-গ্যাসসহ অফুরন্ত সম্পদের ভাণ্ডার, তেমনি এর নানা অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক তাৎপর্যও আছে। এর জন্য একাডেমিক পড়াশোনা, গবেষণাও রয়েছে। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই গত বছর সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়েছে। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আগ থেকেই পড়ানো হয় বিষয়টি। এ ছাড়া নাবিকদের জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে এখন ছোট-বড় শতাধিক জাহাজ নির্মাণ কারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠান রফতানিযোগ্য জাহাজ নির্মাণ করছে। জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাহাজ রফতানিও করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সামুদ্রিক জয়ও উদযাপন করেছে। ২০১২ সালে সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের মাধ্যমে সমুদ্র সীমানায় বাংলাদেশ এক লাখ ১১ হাজার বর্গমাইল বাড়তি কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব লাভ করে।
আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বড় অংশই নদী ও সমুদ্রপথে পরিচালিত হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যও সমুদ্রের ওপরই বেশি নির্ভরশীল। এ পথে কম খরচে ও নিরাপদে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশ, এক দেশ থেকে আরেক দেশে পণ্য আনা-নেওয়া সম্ভব। এই আমদানি-রফতানির পণ্যবাহী জাহাজ যারা চালান, তারাই নাবিক। কত কিছুই না তারা আনেন আমাদের জন্য। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার ক্যাম্পেইনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমরা বলছি_ থ্যাংক ইউ সিফেয়ারারস।

 

ট্যাগঃ , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।


Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119

Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119

Warning: First parameter must either be an object or the name of an existing class in /home/mahfuzma/public_html/wp-content/plugins/bit-form/includes/Admin/Form/Helpers.php on line 119