Mahfuzur Rahman Manik
আইকিউ
অক্টোবর 9, 2012

আইকিউ নিয়ে অনেকের কৌতূহল থাকা অস্বাভাবিক নয়। অলিভিয়ার খবরটা এ কৌতূহলকে আরেকটু উস্কে দেবে নিঃসন্দেহে। সম্প্রতি ডেইলি মেইল সে খবরটি দিয়েছে_ যুক্তরাজ্যের লিভারপুলের অলিভিয়া ম্যানিংয়ের আইকিউ আইনস্টাইন এবং স্টিফেন হকিংয়ের চেয়েও বেশি। তার স্কোর ১৬২। যা কি-না এদের চেয়ে দুই বেশি এবং এটি বিশ্বের ১ শতাংশ শীর্ষ বুদ্ধিমান মানুষের চেয়েও বেশি। অথচ সে ১২ বছরের ছাত্রী। অলিভিয়াকে আবিষ্কার করেছে মেনসা। মেনসা উচ্চ আইকিউধারীদের একটি ফোরাম। যেখানে গোটা পৃথিবীর একশ'রও বেশি দেশের সদস্য রয়েছেন। মেনসা দুটি উপায়ে সদস্য নিয়ে থাকে, অনলাইনে তাদের মেনসা ডট অর্গে (িি.িসবহংধ.ড়ৎম) ৩০ মিনিটের একটি পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে। অবার কয়েকটি দেশে মেনসা একটি টেস্টের আয়োজন করে, সেখানে উত্তীর্ণ হয়েও সদস্য হওয়া যায়। অলিভিয়াকে মেনসা তার সদস্য করে নিয়েছে। সে এখন সেলিব্রেটি। তার কাছে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষার্থী বাড়ির কাজের জন্য আসে। সেও সবাইকে সহযোগিতা করে। চট করে সব সমাধান করে দিতে পারে। যদিও অলিভিয়া তার স্কোর দেখে নির্বাক। মেইল অনলাইনের ছবিতে অলিভিয়াকে একগাদা বড় বড় বইসমেত দেখা যাচ্ছে।
আইকিউ নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই। এই তো সেদিন বিবিসি ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের তরফে বলছে, যেসব গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের সন্তানদের আইকিউ কম। এ রকম আরও গবেষণা রয়েছে। যেমন, শাকসবজি খেলে শিশুর আইকিউ বাড়ে আবার ফাস্টফুড খেলে আইকিউ কমে। মজার বিষয় হলো বিজ্ঞানীরা দেখছেন পুরুষের চেয়ে নারীর আইকিউ বেশি। প্রমাণ হিসেবে যেমন এখন অলিভিয়াকে দেখা গেল কয়েক মাস আগে হেইডিকেও দেখলাম। মাত্র চার বছরের শিশু হেইডির খবর দিয়েছিল টেলিগ্রাফ। যার আইকিউ ১৫৯ অর্থাৎ আইনস্টাইন এবং স্টিফেন হকিংদের চেয়ে ১ কম। সে মাত্র এক ঘণ্টায় অক্সফোর্ড রিডিং ট্রি বুকসের ৩০ খণ্ড পড়ে ফেলে। হেইডিও এখন মেনসার সদস্য।
বোঝাই যাচ্ছে মেনসার সদস্য হওয়াটা যেনতেন কথা নয়। যদিও বাংলাদেশে সরাসরি মেনসা নিজ থেকে টেস্ট দিয়ে সদস্য করায় না ফলে কেউ সদস্য হতে চাইলে অনলাইনই ভরসা। এর সদস্য হতে মোটামুটি ১৩২ আইকিউ স্কোর থাকতে হয়। গোটা পৃথিবীতে বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন পেশার প্রায় ১০ লাখ মানুষ মেনসার সদস্য। বাংলাদেশে কতজন সদস্য রয়েছে, এ বিষয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটে কিছু পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে আমাদের দেশের ৩-৪ জন মেনসার সদস্য।
মেনসার কথা বাদ দিয়েও আইকিউ নিয়ে আমাদের যে খুব বেশি আলোচনা হয় তা নয়। অনেকে অবশ্য আইকিউ সম্পর্কে বুঝতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি কিংবা বিসিএস পরীক্ষার মানসিক দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশ্নের কথা চিন্তা করতে পারেন। সেটাও একটা চিত্র বলা যায়। তবে পুরোটা তা নয়। আইকিউ বুঝতে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান বা সাধারণ জ্ঞানের বাইরে বিচক্ষণতা, দ্রুততা, এবং বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তর প্রদানের ক্ষমতাকে ধরতে পারি। আইকিউর স্কোরের ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ১১০ স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন। ১১০ থেকে ১১৯ স্বাভাবিকের চেয়ে উজ্জ্বল। এরপর ১২৯ পর্যন্ত বিশেষ উজ্জ্বল সম্পন্ন আর স্কোর ১৩০ হতে একেবারে প্রতিভাবান।
অলিভিয়ার স্কোরের কথা ভাবা যায়? ১২ বছরেই তার এ অবস্থা! প্রত্যেকে চাইলে নিজের স্কোরটা জানতে পারেন। এর জন্য ইন্টারনেটে অসংখ্য ওয়েবসাইট আছে। মেনসার ওয়েবসাইটে গিয়েও দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশে যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এর কোনো ব্যবস্থা নেই; ব্যক্তিগতভাবেই শুরু হোক। বলা তো যায় না আমাদের মাঝে অলিভিয়ার চেয়েও কোনো প্রতিভাবান লুকিয়ে থাকতে পারে!

ট্যাগঃ , , , , ,

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।